মৌমিতা রানী সান্যাল


একাত্তরের কথা বলতে আমরা বুঝি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধে কথা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জনের স্বাধীনতা কথা। আমার শ্বশুর মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অসম সাহসী কিশোর মুক্তিযোদ্ধা। তার কমান্ডার রবীন্দ্র নাথ বাগচী প্রত্যয়ন করেছেন। রনাঙ্গনে তিনি ছিলেন দুঃসাহসী। তার কোনো মৃত্যু ভয় ছিল না। প্রত্যেকটি যুদ্ধে তিনি ক্রোলিং করে সম্মুখ ভাগে গিয়ে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাহাদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদের বিরুদ্ধে থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। প্রত্যেকটি যুদ্ধে তার দল বিজয়ী হয়েছে। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়ন রতন কান্দি গ্রামে। আমরা সবাই তাঁর জন্য গর্ব বোধ করি। একদিন তাকে তাঁর মুক্তিযুদ্ধের কথা জিঞ্জেস করলে তিনি বলেন-“২৫ র্মাচ ১৯৭১’ রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা অতর্কিত বাঙালিদের নির্যাতন হত্যা জ্বালাও পোড়াও গণ হত্যা শুরু করলো। তারা আমাদের উপর মুক্তিযুদ্ধ চাপিয়ে দিল। পাকিস্তানি হানাদারেরা ২৫ এপ্রিল’৭১ আমাদের এলাকার বাঘাবাড়ি ঘাট দক্ষিণ পাড় এলো। বাঘাবাড়ি ঘাট দক্ষিণ  পারে এসে এলাকায় ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এক শক্তিশালী মর্টার শেল ছাড়লো। মর্টার শেলের আক্রমনে সব এলাকা কেপে উঠলো। মানুষ জন যার যার মত আত্ম রক্ষার জন্য ছুটাছুটি করতে থাকলো। ২৫ এপ্রিল আমাদের পার্শ্ববতী উল্লাপাড়ার চড়িয়া শিকার নামক গ্রামে পাকিস্তানি সৈন্য এদেশের পাকিস্তান সমর্থক কিছু মানুষকে সাথে নিয়ে গণ হত্যা করলো।জানতে পারলাম ওরা হিন্দুদের প্রতি বেশী ক্ষ্যাপা। যে কোন পুরুষকে আটক করলে হত্যা করার আগে হিন্দু-মুসলমান পরীক্ষা করার জন্য বলতো “কাপড়া তোল চার কলেমা বাতাও”। আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদেরকে ওরা ভারতের দালাল বলতো। 

চড়িয়া গণহত্যা শর্তাধিক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করলো। বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিল। ঐ দিনেই আমাদের শাহজাদপুর উপজেলা সদরে (তৎকালীন থানা সদর)পাকিস্তানি সৈন্যরা আদেশ দিয়ে পাকিস্তান সমর্থক মুসলমান যুবকদের দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও হিন্দুদের বাড়ি ঘর,দোকান-পাট লুটরাজ করলো। বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিল। ১৬ মে’৭১ ফরিদপুর থানার ডেমরা ও সাঁথিয়া থানার রূপসী বাউস গাড়ী গ্রামে গণহত্যা করলো। এই গণ হত্যায় আমার সাত জন নিকট আত্মীয় সহ সাত শতাধিক নারী, পুরুষ, হিন্দু, মুসলমান কে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হলো। সারা দেশে তখন পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের এ দেশীয় দোসর দের সাথে নিয়ে হত্যা, গণহত্যা, জ্বালাও, পোড়াও, নারী ধর্ষণ নিপিড়ন প্রভৃতি মানবতা বিরোধী কাজ করতে লাগলো। আমি ঢাকা ও অন্যান্য শহরে চাকুরি করা প্রত্যক্ষদর্শী ও আমাদের প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য জনাব মো: আব্দুর রহমান এর কাছ থেকে সব শুনতে ও জানতে পারলাম। আমি শুনে সিদ্ধান্ত নিলাম জাতির এই ক্রান্তি কালে মুক্তিযুেদ্ধ অংশ গ্রহণ করবো। তখন আমার মুক্তিযুদ্ধ কী? ভয়ানক এই যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হতে পারবো কিনা ইত্যাদি বুঝে উঠার বয়নাস হয়েছিল না।

২৩ জুলাই’৭১ রাতে আমি এম.পি.এ জনাব মো: আব্দুর রহমান স্যারের সাথে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভারতে উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমরা এক সাথে ২২ জন রওনা হলাম। যাবার সময়ে বাড়ির কাউকে জানিয়ে যাইনি। আমরা সুজানগর সাত বাড়িয়া হয়ে পদ্মা নদী পাড় হয়ে কুষ্টিয়া জেলার এক বর্ডার দিয়ে বর্ডার ক্রস করলাম। আমরা ভারতের জলঙ্গী বর্ডার দিয়ে ভারতে ঢুকলাম। এম.পি.এ স্যারে আমাদের ভর্তির ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি অস্থায়ী প্রবাসী সরকারের উদ্দেশ্যে কলিকাতা গেলেন। আমি প্রথমে ভর্তি হলাম কামারপাড়া ইয়ুথ ক্যাম্পে। বয়সের স্বল্পতার কারণে প্রথম ট্রেনিং কর্তৃপক্ষ আমাকে ভর্তি করতে চাইলেন না। আমার একটা ইন্টার ভিউ নিলেন। আমার দেশ প্রেম, সাহসী মনোভাব ও অন্যান্য শুনে ভর্র্তি করলেন। প্রাথমিক ট্রেনিং ক্যাম্পে শুধু আমাদের ফলইং করিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ানো হত আর পিটি প্যারেড করানো হত। কদিন কামারপাড়া থাকার পর আমাকে ট্রান্সফার করলো মালঞ্চ ক্যাম্পে,তারপর কুড়মাইল ক্যাম্পে। সেখানে থেকে আমাকে আনা হলো পতিরাম ক্যাম্পে। পতিরাম ক্যাম্প থেকে এক যোগে আর্মি লরিতে ২০/২২ জন কে নিয়ে আসা হলো শিলি গুড়িয় জেলার পানিঘাটা নামক ইন্ডিয়ান আর্মি ট্রেনিং ক্যাম্পে। এই ট্রেনিং ক্যাম্প টি ছিল ভারতের শিলিগুড়ি মহকুমার পানিঘাটা নামক স্থানে চারি দিকে পাহাড়ের মধ্যে। স্থান টি ছিল কার্শিয়ান পাহাড় হইতে নেমে আসা একটি ক্যানেলের দক্ষিণ পাশের বনাঞ্চল। ক্যাম্পে নিয়ে আমাদের তাবুর মধ্যে থাকার সিট করে দিল। একটা মগ, একটা প্লেট দিল। ট্রেনিং শুরু হলো আমাদের ২১ দিনের ট্রেনিং হলো। আমাদের কে থ্রিনট থ্রি রাইফেল এস,এল,আর ষ্টেনগান ২টা মর্টার হ্যান্ড গ্রেনেট চার্জ এক্সপ্লোসিভ ও অন্যান্য ট্রেনিং দিল। যুদ্ধে সহযোদ্ধা আহত হলে করণীয় সর্ম্পকে ফাষ্ট এইড সম্পর্কে ধারণা দিল।

ভারতীয় কয়েক জন হিন্দু বিহারী ও শিখ সৈন্য প্রশিক্ষন দিল। প্রশিক্ষক ডি.এস. ভিলন স্যার এর কাছে থেকে জানলাম। আমার এফ.এফ নং-৪৭৪২। ট্রেনিং শেষে আমাকে রবীন্দ্র নাথ বাগচী মো: নজরুল ইসলাম ও রতন কুমার দাসকে নিয়ে আসা হলো ৭ নং সেক্টরের হেড কোয়ার্টার তরঙ্গপুরে। তরঙ্গপুর এনে সিরাজগঞ্জ জেলার ১০ জনের সমন্বয়ে একটি গেরিলা গ্রুপ করা হলো। আমাদের গ্রুপের গ্রুপ লিডার হলেন বেলুকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের এম.এ মান্নান ডেপুটি লিডার হলেন বার্বু রবীন্দ্র নাথ বাগচী। আমরা তরঙ্গ থেকে অস্ত্র গোলা-বারুদ,রেশনিং ও পকেট মানি নিয়ে ছিলাম। মৃত্যু যে হবেনা এমন কোন গ্যারান্টি ছিল না। তাই আমি তরঙ্গপুর বাজার থেকে একখানা শ্রী শ্রী চন্ডী গ্রস্থ,একটি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও একটি ৪ ব্যান্ডের রেডিও কিনলাম। তরঙ্গপুর থেকে কিছু দূর বাসে এসে একটি ষ্টেশন থেকে ট্রেনে উঠলাম। শিলিগুড়ি রেলওয়ে জংসন ষ্টেশনে এসে আমাদের ট্রেন বদলাতে হলো। আসাম গামী ট্রেনে উঠলাম। ভারতীয়রা আমাদেকে জয় বাংলার লোক বলতো। সরকারি বাস ও ট্রেনে টিকেট চেতে এলে “জয় বাংলা” বললেই আর টিকেট বা ভাড়া চাইতো না।

আসাম গামী ট্রেনে ধুবরী নামক ষ্টেশনে আমরা নামলাম। বাস যোগে মানিকার চর এলাম। রাত হয়ে যাবার কারণে রাতে একটা বডিং এ থাকলাম। পরদিন সকালে নদী পার হয়ে এলাম। তদানীন্তন রংপুর জেলার কুড়িগ্রাম মহকুমার (বর্তমানে জেলা) মুক্তাঞ্চলে স্থাপিত রৌমারী মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। রৌমারী ক্যাম্পে আমরা স্নান খাওয়া দাওয়া করলাম। আমাদের কমান্ডার স্যার সিরাজগঞ্জ জেলার মুক্তাঞ্চল যমুনার চড়ে পৌছানোর জন্য নৌকা ভাড়া করলেন। রৌমারী ক্যাম্প থেকে রাতের খাবার খেয়ে রাত ৯:০০ টার দিকে আমাদের নৌকা ছাড়লো। ইহা ছিল ৬ সেপ্টেম্বর’৭১। নৌকা বাহাদূরাবাদ ঘাটের সম্মূখ দিয়ে আসতে হয়। আমরা জানতে পরে ছিলাম। বাহাদূরাবাদ ঘাট অত্যন্ত ঝুঁকি পূর্ণ এলাকা। ঐ ক্যাম্পের পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকারেরা ভয়ানক । তারা স্পিড বোর্ড নিয়ে রাতে নদী টইল দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের নৌকা পেলে ধরে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে নিয়ে অমানুষিক অত্যাচার করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। আমাদের কমান্ডার স্যার নির্দেশ দিলেন আপনারা সবাই নৌকার ডওরার মধ্যে পজিশন অবস্থায় থাকুন।

পাকিস্তানি হায়েনারা ধরতে এলে। আমরা ধরা দিব না। যুদ্ধ করবো। যুদ্ধ করে শহীদ হবো কিন্তু ওদের হাতে ধরা দিব না। রাত ২.০০ টার দিকে আমরা বাহাদূরাবাদ ঘাট এলাকা দিয়ে করতে থাকলাম। ওদের সার্চ লাইটের আলো এসে বার বার নৌকাতে পড়ছিল। ভগবানের কৃপায়-ওরা আর স্পীড র্বোড নিয়ে ধরতে এলোনা।আমরা বাহাদূরাবাদ ঘাট এলাকা অতিক্রম করলাম। আমাদের সাথে চিড়া গুড় ছিল। ভোরে এক কাইসা খেতের মধ্যে নৌকা তুকিয়ে দিয়ে প্রাত:ক্রিয়া করলাম। তার পর নৌকা ছাড়লো। তখন কাজিপুর থানার অধিকাংশ এলাকা পাকিস্তানি হানাদারদের দখলে। কাজিপুর থানার সম্মুখে দিয়ে আমাদের নৌকা আসবে। দেখে শুনে থামিয়ে থামিয়ে ৪ দিন ভরে নৌকা এসে পৌছালো সিরাজগঞ্জ চর। ইহা ছিল টাঙ্গাইল জেলার সিংগুলির কাছাকাছি। নৌকাতেই রান্নার ব্যবস্থা ছিল। মাঝিরা কোন রকমে রান্না করে আমাদের খাওয়ানো। এই ভাবে খেয়ে চলছিলাম।

একদিন রাতে যমুনা নদীর এপাড়ে চলে এলাম। চলে এলাম বেলকুচি কামার খন্দ নির্বাচনী এলাকার এম.এন.এ জনাব মো: আব্দুল মোমিন তালুকদারের গ্রামের বাড়িতে। তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না । তাঁর ভাই মো: রশিদ তালুকদার আমাদের থাকা খাওয়া ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করলেন। অক্টোবর’৭১ মাসের মাঝা মাঝির আগ পযর্ন্ত আমাদের সম্মূখ যুদ্ধ করার নির্দেশ ছিলনা। আমরা পাকিস্তানি হানাদার সৈন্য ও তাদের দোসরদের আত্মঙ্কে রাখার জন্য গেরিলা কার্যক্রম চালাতাম। ক্যাম্পের নিকট বতী গিয়ে ২/৪ টা থ্রিনট থ্র্রি রাইফেলের আকাশ মুখি গুলি ছুড়ে চলে আসতাম। পাকিস্তানি দালাল,পীচ কমিটির লোক ও অন্যান্যরা আমাদের অস্তিস্তের কথা জানতে পারতো। আমরা দিনের বেলা স্কুলে বা কারো বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকতাম। পালা ক্রমে দু’জন করে করে নিজেদের কে পাহাড়া দিতাম। প্রতি রাতে কমান্ডার স্যার আমাদের পাশ ওর্য়াড দিতেন। আমরা রাতে বিভিন্ন রাজাকারদের বাড়িতে গিয়ে তাদের বুঝাতাম। সকালে আমরা অস্ত্রে ফুল থ্রু মারতাম।

তখন দেশের অধিকাংশ মানুষ ছিল স্বাধীনতার পক্ষে। তবুও আমাদের কে শেন্টার বা খাবার দিতে চাইতেন না। কারণ অধিকাংশ গ্রামেই ছিল পাকিস্তানি দালাল ও রাজাকার। তারা খোঁজ জানলে পাশর্^বতী আর্মি রাজাকার ক্যাম্পে সংবাদ দিয়ে তাদেরকে নিয়ে এসে বাড়িঘর জ¦ালিয়ে দিবে,গণহত্যা,ও অত্যাচার চালাবে এই ছিল তাদের ভয়। আমাদের সাথে সব সময় চিড়া গুর থাকতো। স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতা-কমীদের ট্রেনিং দেওয়ায়ে আমাদের সাথে নিলাম। অক্টোবর’৭১ এর শেষ দিক থেকে আমাদের উপর অপারেশন চালানোর অনুমতি এলো। আমরা রেকী করে দেখতাম। তারপর আক্রমন করতাম। আমরা ১ বেলকুচি থানা আক্রমন যুদ্ধ ২কালিয়া হরিপুর রেলওয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন রাজাকার ক্যাম্প এ্যাম্বুস ৩ কল্যানপুর যুদ্ধ ও ৪ শাহজাদপুর উপজেলার ধীতপুর নামক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি।

আমাদের প্রত্যেকটি যুদ্ধ ছিল ভয়াবহ। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে আমরা পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তাম। আমরা সকল যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। যুদ্ধ জয়ের পর ২৪ জানুয়ারী’৭২ রবিবার আমাদের সকল অস্ত্র সিরাজগঞ্জ অস্ত্র জমা নেওয়া ক্যাম্পে জমা দিয়ে বাড়িতে চলে আসি। রতন কান্দি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দেবেন্দ্র নাথ সান্যাল এর কাছ থেকে অষ্টম শ্রেনীর অটোপাসের টিসি নিয়ে শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা শুরু করি। “তারপর তিনি দিনে দিনে লেখা-পড়া শেষ করে”। সোনালী ব্যাংকের চাকরিতে যোগাদান করেন। আটত্রিশ বছরাধিক সোনালী ব্যাংক লিমিটেডে চাকুরি করে ২৬/০৯/২০১৯ ইং তারিখে এস.পি.অ হিসেবে অবসর গ্রহণ করে সর্তমানে অবসর জীবন যাপন করছেন।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা পুত্রবধূ, গৃহিণী ও ছাত্রী।