ইকবাল মাহমুদ হিরু, সদরপুর : ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ ফজলুল হক পাইলট ইনষ্টিটিউটের সংখ্যালঘু এক শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সুবিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষকের অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ ফজলুল হক ইনষ্টিটিউটের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিপুল কুমার দত্ত শারিরীক অসুস্থ্যতার কারনে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ১১ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটি নেন। ছুটি শেষে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে গেলে প্রধান শিক্ষক মাজেদা সুলতানা তাকে যোগদান করিতে দেয়নি। বিষয়টি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আঃ কাদের মিয়াকে জানানো হলে তিনি বিপুল কুমার দত্তের বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।

সহকারী শিক্ষক বিপুল কুমার দত্ত অভিযোগ করে বলেন, গত ১২ জুন তারিখে প্রধান শিক্ষক মাজেদা সুলতানা তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে এনে একটি সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে রাখে। পরে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেয়।

পরবর্তীতে বিপুল কুমার দত্ত জানতে পারেন, প্রধান শিক্ষক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার পর নিজেই পদত্যাগ লিখে নিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক প্রতারনামূলক ভাবে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে সেই কাগজে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি বলে লিখে নিয়েছেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক বিপুল কুমার দত্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। একই সাথে চাকুরী পূর্নবহালের দাবীও জানান।

বিপুল কুমার দত্ত বলেন, আমাকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার পর আমি যাতে কোন উচ্চবাচ্য না করি সেজন্য আমাকে প্রাননাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। চাকুরী হারিয়ে এবং প্রাননাশের হুমকিতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাজেদা সুলতানা জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক বিপুল কুমার দত্ত গত ১২ জুন অসুস্থতার কারনে আমার কাছে স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমি তাকে জোর পূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেইনি। তিনি যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা ও বানোয়াট। স্বেচ্ছায় তার পদত্যাগের কারনে আমরা তার স্থলে নতুন একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিয়েছি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আঃ কাদের মিয়া জানান, সহকারী শিক্ষক বিপুল কুমার দত্ত স্বেচ্ছায় পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। সেইদিন আমি নিজে স্কুলে উপস্থিত ছিলাম।

সদরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ জামসেদ জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(এইচ/এসপি/জুলাই ০২, ২০২২)