রিপন মারমা, রাঙামাটি : পাখির প্রতি এ ভালোবাসার জন্য গ্রামের অনেকে মোঃ ইন্তাজ আলীকে (ভান্ডারি) পাগল ডাকে। সেসবে কর্ণপাত করেন না তিনি। তবে তার বড় দুঃখ হলো, গ্রামের মানুষ পরিবেশের জন্য পাখির গুরুত্ব বুঝতে পারে না। পাখিদের সেবায় জীবনের অনেক সময় ব্যয় করেছেন, কিন্তু এতে তার কোনো আক্ষেপ নেই।

পাখিদের বন্ধু মোঃ ইন্তাজ আলী (ভান্ডারি) রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ি সদরে তরকারি ব্যবসায়ি হিসেবে কর্মরত আছেন। তরকারি বিক্রি করা সময় গ্রামের এ শালিক পাখি কে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বড়ইছড়ি জনকল্যাণ ফার্মেসী ডা. আশিষ সাহার কাছে নিয়ে আসেন। ডা. আশিষ সাহা শালিক পাখিটিকে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা শুরু করেন। চিকিৎসা করার পরে শালিক পাখিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায় মোঃ ইন্তাজ আলী (ভান্ডারি) সে পাখি প্রেমিক যে কোনো ফাঁদ বা জাল থেকে পাখি উদ্ধার করে থাকেন। অসুস্থ পাখিকে উদ্ধার করে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত শুশ্রূষা করেন, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। এমনকি মাঝেমধ্যে পাখিরাই খাবারের জন্য তার বাসায় চলে আসে।

গ্রামের কেউ পাখি ধরলে মোঃ ইন্তাজ আলী (ভান্ডারি) সেটা ছাড়িয়ে আনতে যান। অনেকসময় তাদেরকে মানানো কষ্ট হয়ে যায়। কখনো তাদের কাছ থেকে পাখি উদ্ধার করতে পারেন, আবার কখনো তাকে ব্যর্থমনোরথ হয়ে ফিরতে হয়। তবে পাখিদের জন্য সর্বোচ্চটুকু করতে নিজের চেষ্টা কখনো থামান না তিনি।

এভাবেই পাখিদের বিপদের বন্ধু হিসেবে আবির্ভূত হন মোঃ ইন্তাজ আলি। পার্বত্য এলাকাতেই ঝড় বৃষ্টি হওয়ায় আর বন্যা খুবই সাধারণ একটি বিষয় এখানে। এসবের কারণে অনেক পাখির বাসা ধ্বংস হয়। মা পাখি উড়ে যেতে পারলেও, বাসায় একা পড়ে থাকে ছানারা। ঝড়ে অনেক পাখি ও ছানা মারা যায়। কোনো আহত পাখিকে দেখতে পেলে সেটাকে বাঁচাতে উঠেপড়ে লাগেন তিনি।

ইন্তাজ আলী বলেন, ঝড় বাতাস শেষ হওয়ার পর আমি আহত পাখির সন্ধানে বের হই। কোনোটাকে পেলে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর সুস্থ হলে বা পালক গজালে সেগুলোকে আমি ছেড়ে দেই। অনেকসময়ই তারা আমার বাড়ির বিভিন্ন গাছে আশ্রয় নেয়।

(আরএম/এএস/জুলাই ০৮, ২০২২)