মাহবুবুর রহমান, ঝালকাঠি : ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালি ও গাবখান নদীর মোহনায় জেগে উঠা বিশাল চরে প্রস্তাবিত ইকো পার্কের সরকারি সম্পত্তি ভূয়া ডিক্রীর মাধ্যমে বেদখল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ইকো পার্ক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন কমিটি ইকোপার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সমাধানে এ প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। 

ঝালকাঠি ডিসি অফিসের সামনে ২৫ জুলাই সকাল ১১ টায় পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যোগ দেন।

এসময় বক্তব্য রাখেন আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মঈন তালুকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মু. আল আমিন বাকলাই, ঝালকাঠি মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি কেওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান, কর্মসূচির সঞ্চালক সাংবাদিক আক্কাস সিকদার, বিশিষ্ট সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা, ধানসিড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মাসুম, জাসদ সভাপতি সুকমল ওঝা দোলন, কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দাস হরি, কমিটির সদস্য কবিতা হাওলাদারসহ আরো অনেকে। বক্তারা বলেন, যে আদালতে মামলা জটের কারণে বছরের পর বছর সময় ক্ষেপন হচ্ছে, সেই আদালতে মাত্র ২ মাসে এ মামলা শুরু করে রায় হওয়াটা রহস্যজনক এবং বিতর্কীত।

স্বার্থান্বেষী মহলটি এ রায়ের মাধ্যমে পার্কের জায়গা দখলের তৎপরতা শুরু করেছে। ২০০৪ সালে সরকার ইতিপূর্বে এই প্রস্তাবিত ইকো পার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একনেকের সভায় ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রায় ৯০ একর সম্পত্তি সরকারি কাগজপত্রে খাস সম্পত্তি সরকারি ১ নং খতিয়ানে। তৎকালিন জেলা প্রশাসক মিহির কান্তি মজুমদার এই খাস সম্পত্তিকে ইকোপার্কের জন্য বরাদ্দ করেন।

বক্তারা আরো বলেন, ঝালকাঠিতে এভাবে ভূয়া রায় ডিক্রির মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি বিশেষ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, কীর্ত্তিপাশা জমিদার বাড়িসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা প্রদানের নজির সৃষ্টি করে ছিলেন ইতিপূর্বে কর্মরত এক বিচারক। তিনি যাবার পর ঝালকাঠি বিচার বিভাগে আবার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যদিও আন্দোলনের চাপে সেইসব মিথ্যা রায় কার্যকর হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি সেই নজির আবার শুরু হয়েছে। এটা ঝালকাঠিবাসির জন্য লজ্জা ও দুঃখের বিষয়। একই ভাবে আমরা এবারেও আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের ইকো পার্ক ফিরে পাব বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে ইকো পার্ক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মু. আলআমিন বাকলাই বলেন, এরপর আগামী ২৮ জুলাই আমরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়ে দ্রুত ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডিক্রী রদের মামলা করার অনুরোধ জানাবো। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আমরাও ডিক্রী রদের মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এছাড়াও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিস্তারিত ঘটনা উল্লেখ করে গণস্বাক্ষর সহকারে প্রধানমন্ত্রী ও পরিবেশ অধিদপ্তরে এবং পরিবেশ নিয়ে কাজ করা এনজিওদের অবগত করা হবে। যাতে আমরা তাদের এ আন্দোলনে সমর্থন ও সহযোগীতা পাই।

(এমআর/এসপি/জুলাই ২৫, ২০২২)