লোহাগড়া প্রতিনিধি : নড়াইলের  লোহাগড়ায় অপপ্রচারের প্রতিবাদে সুবিধাভোগীদের এক ব্যতিক্রমধর্মী  প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে সুবিধাভোগীদের ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো: নুরুল ইসলাম জানান, গত ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে ৬ জুলাই দিঘলিয়া ইউনিয়নে ভিজিএফ কর্মসূচীর আওতায় পাঁচ দশমিক চুয়াল্লিশ মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দের পর গত ৭ জুলাই ৯টি ওয়ার্ডের দরিদ্রদের ডেকে এনে মেম্বর ও সরকারি তদারকী কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জনপ্রতি ১০ কেজি করে ৫৪৪ জন দরিদ্রকে মোট ৫হাজার ৪’শ ৪০ কেজি চাউল বিতরণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ঈদুল আযহার চাল বিতরণের পর থেকে দিঘলিয়ার একটি কুচক্রিমহল চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিনকে বিপাকে ফেলতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে। ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মের কথিত অভিযোগ এনে ওই মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুবিধাভোগীরা এ প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে উপস্থিত সুবিধাভোগী দিঘলিয়া গ্রামের উত্তর পাড়ার যমুনা বিশ্বাস, সুনিতা বিশ্বাস, রত্মা বিশ্বাসসহ অনেকে প্রথমবারের মতো চাল পেয়ে বেজায় খুশি। তারা চেয়ারম্যানের দীর্ঘায়ু কামনা করে বলেন, আমাদের কোনদিন কেউ এক কেজি চালও দেয় নাই। এই প্রথম সরকারী চাল পেয়েছি। দিঘলিয়া উত্তর পাড়ার মৃত শিবু বিশ্বাসের স্ত্রী বন্ধনা রাণী বিশ্বাস ও কোলা গ্রামের সোহাগ মৃধার স্ত্রী তামান্না বেগমসহ অনেকে বলেন, চাল দেয়ার কথা শুনে বোর্ড অফিসে এসে দেখি চাল বিতরণের তালিকার তাদের নাম নেই! তখন তারা চেয়ারম্যানকে বল্লে চেয়ারম্যান প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দিয়েছেন।

সমাবেশে আগত অপর সুবিধাভোগীরা বলেন, দিঘলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন স্বচ্ছভাবে দরিদ্রদের মাঝে চাউল বিতরণ করেছেন। এর আগে কোন চেয়ারম্যান এতো সুন্দরভাবে চাউল বিতরণ করেনি। একটি কুচক্রিমহল চেয়ারম্যানের ভাবমুতর্তি ক্ষুন্ন করতে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বর শিবনাথ বলেন, চেয়ারম্যান সরকারি চাউল দেয়া ছাড়াও সাধারণ মানুষদের নিজের পকেট থেকে নগদ টাকা দিয়েছেন।

দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার ওহিদুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়নে ভোটার আছে প্রায় ২১-২২ হাজার। চাউল বরাদ্দ পেয়েছে ৫৪৪ জনের। অথচ পরিষদে চাউল নিতে আসছিল প্রায় ২ হাজার দরিদ্র মানুষ। সরকারি বরাদ্দের চাউল দেয়া শেষ হয়ে গেলে চেয়ারম্যান পকেটের নগদ টাকা দিয়েছেন। ওই অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। এ অপপ্রচার চেয়ারম্যানকে বিপাকে ফেলানোর ষড়যন্ত্র’।

দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘চাল বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি সকলকে গুজবে কান না দিয়ে ইউনিয়নের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, বয়স্কভাতা-বিধবা ভাতা, শিশু কার্ড বা পঙ্গু ভাতার কার্ড করতে কোন টাকা লাগে না। কেউ কোন মেম্মর বা দালালকে কোন প্রকার ভাতার কার্ড করতে টাকা দিবেন না’।

(আরএম/এসপি/আগস্ট ০১, ২০২২)