নিউজ ডেস্ক, ঢাকা : ভারতের উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়ের মানুষ তার ভয়েই তটস্থ থাকতো। কখন কোথায় কার উপর বিপদ আসে সে ব্যাপারে আগ্রিম জানা যেতোনা কিছুই। আর যাদের একটু মদ্যপানের অভ্যাস আছে তাদের বিপদতো আরো কয়েকগুন বেশি। কারন মদ্যপের মাংসই তো তার অতি প্রিয়। প্রতি রাতে মদ্যপের মাংসে ডিনার ছাড়া তার চলেইনা।

যা কথা বলা হচ্ছে, সে একটি লেপার্ড। তার ঔদ্ধত্য কমাতে প্রায় ২ বছর দিনরাত চেষ্টার পর অবশেষে তাকে মারতে সক্ষম হয়েছে নিাপত্তারক্ষীরা। তাকে ধরতে গলদঘর্ম হতে হয়েছিলো উত্তরাখন্ডের নিরাপত্তাবাহিনীকে। যেমন ধূর্ত, তেমন সাহসী লেপার্ডটি। অবশেষে ২ বছরের এই সন্ত্রাসের অবসান ঘটল। কিন্তু মারা যাওয়ার আগে ১৪ জনকে তার নৃশংসতার জন্য প্রাণ বলি দিতে হয়েছিল।

উত্তরাখন্ডের জঙ্গল সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের উপরই মূলত নজর ছিল লেপার্ডটির। কারণ, মানুষ মেরে দ্রুত জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে যাওয়া সম্ভব ছিল। আর দ্বিতীয়ত, মদ্যপ ব্যক্তিদের মারতে বিশেষ কষ্টও করতে হত না। বেশির ভাগ সময় তারা নিজেরাই প্রায় বেহুঁশ হয়ে থাকতেন। ২০১২ সালের ২৩ জানুযারি শুরু হয়েছিল মানুষ মারার খেলা। এর পর গত আড়াই বছরের মধ্যে ১৪ জনকে শিকার বানিয়েছিল লেপার্ডটি। গত অগস্টে পিথোরাগড় বন দফতর সেটিকে মানুষখেকো ঘোষণা করার পর শিকারিরা তাকে মারার চেষ্টা করতে থাকে।

উত্তরাখণ্ডের দুই নামী শিকারি লখপত সিং রাওয়াত এবং জয় হুলকি-র প্রচেষ্টায় অবশেষে লেপার্ডটিকে মারা সম্ভব হয়। তবে তাকে মারতে সেই পুরনো পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়েছিল। গাছের উপর মাচা বেঁধে, অদূরে একটি ছাগল টোপ হিসাবে রেখেই সাফল্য মেলে। তবে লেপার্ডটি মারার পরও সন্ত্রাস শেষ হওয়ার ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি ডিস্ট্রিক্ট ফরেস্ট অফিসার ওয়াই কে সিং। তিনি জানিয়েছেন, মৃত লেপার্ডটির সঙ্গে অন্য একটি কম বয়সি পুরুষ লেপার্ডকে দেখা গিয়েছে। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সেটি পালাতে সক্ষম হয়েছে। যদি মানুষের রক্তের স্বাদ তার মুখেও লেগে থাকে, তবে তা খুব চিন্তার বিষয়। সিং আরও জানান, এখনই তাকে মারার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। আগে তার গতিবিধির উপর নজর রাখা হবে। যদি এমন ঘটনা ফের শুরু হয়, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ভাবনা-চিন্তা করা যাবে।

(ওএস/পি/অক্টোবর ০৬, ২০১৪)