মো. মনিরুজ্জামান মৃধা মন্নু, মধুখালী : ইউটিউব দেখে ড্রাগন ফল চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের চর আশাপুর গ্রামের দিনমজুর সেকেন্দার আলী শেখের পুত্র মো. জামাল শেখ।

মা, বাবা, দুই ভাই এক বোন নিয়ে অভাবের সংসার। সারা বছর অভাব অনাটন লেগেই থাকে। দরিদ্র বাবার পক্ষ্যে সম্ভব হয়নি লেখাপড়া করানোর। আর্থিক অনাটনের মধ্যেই থাকতে হতো জামালের পরিবারকে। যে কারনে অষ্টম শ্রেনি পাশ করেই সংসারের অভাব অনাটন ঘোচানের জন্য জীবিকার সন্ধানে চলে যান ঢাকাতে জামাল শেখ। ঢাকা শহরে কাজ খোজার জন্য বিভিন্ন অলিগলিতে ঘুরতে ঘুরতে একদিন ফলের দোকানে ড্রাগন ফল দেখে মোবাইলে ইউটিউবে খুজতে থাকেন ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি। ইউটিউবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি দেখে জামাল স্বপ্ন দেখেন ড্রাগন ফল চাষের। ইউটিউবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি রপ্ত করে ঢাকা থেকে বাড়ীতে সিদ্ধান্ত নেন ড্রাগন ফল চাষের। প্রথমে জামাল শেখ বাড়ীর পাশে ৪৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ড্রাগন ফল চাষ।

এ প্রসঙ্গে জামাল শেখ এ প্রতিনিধিকে জানান, ইউটিউব দেখে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি রপ্ত করেন। তারপর ইউটিউব থেকে ড্রাগন ফলের চারার খোঁজ করে ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জ থেকে তিনি প্রতিটি ৩০টাকা দরে মোট ৬৭২টি চারা ক্রয় করে জমিতে রোপন করেন।

চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জামাল জানান ড্রাগন ফলের চারা রোপনের জন্য রড় ও সিমেন্টের পিলারের প্রয়োজন। জমিতে প্রথমে পিলার গেড়ে প্রতিটি পিলারের চারটি করে চারা লাগাতে হয়।

জামাল আরো জানান ৬৭২চি চারার জন্য তিনি প্রথমে জমতে ১৬৮টি পিলার দেন এতে তার খরচ হয় ৮৪ হাজার টাকা আর প্রতিটি চারা ৩০টা দরে ৬৭২টি চারা ক্রয় করেন ২০ হাজার ১শ৬০ টাকা দিয়ে। চারা রোপন করা পর্যন্ত তারা খরচ হয় মোট দেড় লক্ষাধিক টাকা। তিনি জানান ড্রাগন ফল চাষে তেমন খরচ হয়না বছরে একবার দিলেই হয় আর প্রতিটি পিলারের গোড়ায় ২০ থেকে ৩ কেজি গবরের স্যার দিতে হয়।

জামাল জানান, ১৭ মাসের মাথায় গাছে ফল আসে এবং ফল আসার ৪৫দিনের মধ্যে বাজার জাত করা স্বম্ভব হয়েছে। তিনি জানান প্রথম মাসেই তিনি বাজারে ৬০ হাজার টাকার ফল কিক্রি করেছেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে তিনি তার খরচের টাকা পেয়ে যাবেন। ড্রাগন ফল চাষ অনেক লাভ জনক কারন ড্রাগন ফলের চারা একবার রোপনর পর ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ফল দেয়।

মো: জামাল শেখ জানান তিনি সরকারি সহযোগিতা পেলে ড্রাগন ফল চাষ আরো সম্প্রসারিত করতে পারবেণ। তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে মধুখালী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভির রহমান জানান তিনি বিষয়ঠি অবগত হয়েছেন, সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।

(এম/এসপি/আগস্ট ০৬, ২০২২)