আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শস্য এবং সূর্যমুখী তেল নিয়ে ইউক্রেন বন্দর ছেড়েছে আরও চার জাহাজ। নিরাপদ করিডোর দিয়ে ওই জাহাজগুলো ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দর থেকে ছেড়ে গেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আকস্মিক হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত চলছেই। এদিকে যুদ্ধ সংঘাতের কারণে ইউক্রেনে লাখ লাখ টন শস্য আটকা পড়েছে। এসব শস্য ইউক্রেনের বাইরে যেতে না পারায় বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট এবং খাদ্যপণ্যের মূল্য অনেক বেড়ে গেছে।

তবে সম্প্রতি জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন থেকে শস্য নিয়ে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেন ঐক্যমতে পৌঁছেছে। এর ফলে চলতি মাসের শুরুতেই ইউক্রেন থেকে প্রথম শস্যবাহী একটি জাহাজ তুরস্কের বসফরাস প্রণালীতে পৌঁছায়।

গত ১ আগস্ট সকালে ‘রাজোনি’ নামের সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি ওডেসা থেকে লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাতিসংঘ ও তুরস্ক আলোচনার মাধ্যমে স্থির করেছে যে সাগরের একটি নিরাপদ করিডোর দিয়ে এই শস্যবাহী জাহাজ চলবে। প্রথম জাহাজে ২৭ হাজার টন শস্য ছিল।

তবে গত মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে নিরাপদে শস্য রপ্তানির সুযোগ তৈরি করার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আর এতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জাতিসংঘ এবং তুরস্কও সই করে।

চুক্তির শর্ত বলছে, ইউক্রেন থেকে খাদ্যবাহী কোনো জাহাজে রাশিয়া আক্রমণ করবে না, তবে এসব জাহাজে করে ইউক্রেন যেন অস্ত্র আনা নেওয়া করতে পারে তা নিশ্চিত করবে তুরস্ক।

ইউক্রেনের সরকার বলছে, ওডেসা ও তার আশপাশের বন্দরগুলোতে আরো ১৬টি জাহাজ ৬ লাখ টন খাদ্য শস্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। এসব খাদ্যপণ্য আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ যেখানে সংকট রয়েছে সেখানে রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যশস্য রপ্তানির দিক থেকে ইউক্রেন বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সানফ্লাওয়ার তেলের ৪২ শতাংশ, ভুট্টার ১৬ শতাংশ এবং গমের ৯ শতাংশ উৎপাদিত হয় দেশটিতে। ইউক্রেনের গম সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়ার প্রথম তিনটি দেশের সারিতে রয়েছে মিশর, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ।

এদিকে রোববার ওডেসা এবং চরনোমর্স্ক বন্দর দিয়ে যে চারটি জাহাজ ইউক্রেন ছেড়েছে সেগুলোও তুরস্কের বসফরাস প্রণালীতে পৌঁছাবে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দুটি তুরস্কের বন্দরে ভিড়বে এবং বাকি দুটি যাবে ইতালি ও চীনে।

অপরদিকে একটি খালি জাহাজ ইউক্রেনে যাচ্ছে। ওই জাহাজে করেও ইউক্রেন থেকে শস্য নিয়ে আসা হবে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশ থেকে নিরাপদেই শস্য রপ্তানি করা যাচ্ছে। সে কারণে তারা জাহাজ কোম্পানিগুলোকে দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

(ওএস/এএস/আগস্ট ০৭, ২০২২)