রঘুনাধ খাঁ, সাতক্ষীরা : “ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষন ও বিকাশে আদিবাসি নারীর ভ’মিকা” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় পালিত হয়েছে আন্তজার্তিক আদিবাসী দিবস। এ উপলক্ষে বুধবার সকাল ১০টায় আদিবাসি জনগোষ্ঠির অংশগ্রহনে সাতক্ষীরা শহরের ম্যানগ্রোভ সভাকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিআইপি সাতক্ষীরার সভাপতি হরেকৃষ্ণ মুন্ডা। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ শহিদুর রহমান। বিশেষ অতিথিরক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সাংবাদিক কল্যান ব্যানার্জি, শ্যামল বিশ্বাস, প্রভাসক ইদ্রিস আলী, আবুল কালাম আজাদ, রানা গাইন,রবিউল ইসলাম,গোবিন্দ মুন্ডা,পুজা মুন্ডা, বিশ্বজিত মুন্ডা, নরেন্দ্র মহাতো প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সরকারের ঘোষিত নানা কর্মসুচি আদিবাসি ও ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠির অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভুমিকা রাখলেও বর্তমানে তারা নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত। তাদের সবচেয়ে বড় এবং কষ্টকর সমস্যা হচ্ছে এক সময় তারা প্রচুর জমি-জমার মালিক হলেও তাদের ছেলে-মেয়ে বসবাস করার জায়গা নেই। ভুমিকে তারা পবিত্র বলে মনে করতেন। তাই কোনদিন জমি দখলের জন্য দলিল করা প্রয়োজন একথা ভাবেনি।

অন্যদিকে রয়েছে শিক্ষার সমস্যা। মুন্ডা বলে তাদের ছেলে-মেয়েদের অনেক সময় স্কুল থেকে নাম কেটে দেয়। ফলে ছেলে-মেয়েরা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নেই সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। সভ্যতার উচ্চ শিখরে পদার্পণ করেও তারা মুন্ডা বলে হাসপাতেল তাদেরকে যথাযথ চিকিৎসা দেন না সভ্য সমাজের মানুষেরা। মুন্ডাদের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে তারা মজুরি বৈষম্যের শিকার। তাদের কম মজুরি দিলে তারা কোন প্রতিবাদ করে না। ভয়ে তারা বেশি টাকা চাইতে পারে না।

এক কথায় রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে প্রধান ৫টি মৌলিক অধিকার থেকেই তারা বঞ্চিত। অভাব তাদের জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে পূজা পার্বণ, আনন্দ অথচ তাদের রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। তাদের সম্পত্তিতে অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বক্তারা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী শিক্ষার্র্থীদের কোট ভিত্তিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থাসহ ১৩ দফা দাবি পেশ করেন সরকারের কাছে।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আদিবাসী বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশন সাতক্ষীরার সাধারণ সম্পাদক শেখ আফজাল হোসেন।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১০, ২০২২)