একে আজাদ ও মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক মোঃ মোতাহার হোসেন এখন সচ্ছল কৃষক। তিনি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাঘার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ছিলেন। চলতি বছরের ২৪ জুলাই অবসরে যান তিনি।

শিক্ষকতা থেকে অবসরে গেলেও তিনি সংসারের হাল ছাড়েনি। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ফসলের জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে। বছর জুড়েই চাহিদা থাকায় এবং অন্য ফসলের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় পটল চাষ করেছে তিনি

সরেজমিনে সরিষা ইউনিয়নের বাঘার চর এলাকায় গিয়ে দেখা হয় অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক মোঃ মোতাহার হোসেনের সাথে। তিনি তার এক খন্ড জমিতে লাগানো পটল ছিড়তে ব্যস্ত সময় পার করছে।

এ সময় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ মোতাহার হোসেন বলেন, এ বছর ২৬ শতাংশ জমিতে পটলের আবাদ করছে। তবে বর্তমানে পটলের দাম গত বছরের তুলনায় কম। তবে খরচের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে বেশি। বর্তমানে জনের দাম বেড়ে গেছে, সার, ডিজেল এর দাম ও বৃদ্ধি। যার ফলে আমার অন্য সব ফসলের জমি কন্টাক দিয়ে দিছি। আমার মতো মানুষের এখন আর চাষে লাভ হয় না। তবে এ বছর ও ৮/৯ বিঘা জমিতে পিঁয়াজের চাষ করেছিলাম।

তিনি পটল চাষ নিয়ে বলেন, এ বছর জমি চাষ বেছন লাগানো, জানলা দেওয়া সহ জন পরেতের খরচ পায় ২০ হাজার টাকা হয়ে গেছে।এর পর আবার দীর্ঘদিন বৃষ্টি না থাকায় অতিরিক্ত সেচ দিতে হচ্ছে। তবে পটল থাকায় সংসার চালাতে তেমন বেগ পেতে হয় না। সপ্তাহে ৩ মণের ও বেশি পটল বিক্রি করতে পারি। বিক্রি করাও খুব সহজ। পাংশা আরতে নিয়ে গেলেই হয়। এখন দাম মোটামুটি খারাপ না। কিছু দিন আগে ১০/১১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হইছে। এখন ২৪/২৫ টাকা করে বিক্রি করতে পারছি। প্রতি সপ্তাহে ২/৩ বার পটল বিক্রি করতে পারায় আমার ঘরে এখন পিঁয়াজ ধরা আছে।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন , পটল একটি লাভ জনক চাষ যেহেতু এটা সারাবছর উৎপাদন সম্ভব। পাংশা উপজেলা তেমন সবজি চাষ হয় না। এ বছর ৫/৭ হেক্টর জমিতে পটল চাষ হয়েছে। পটল যাতে পোকা নষ্ট না করতে পারে এ জন্য কৃষকের মাধ্যমে প্রতিটি ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ট্র্যাপ (কীটনাশক ফাঁদ) ব্যবহার করা হয়েছে। কৃষকেরা এটা কে যাদুর বাক্স বা টেবলেট বলে থাকে। এতে কীটনাশকের ব্যবহার প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সবসময় আধুনিক পদ্ধতিতে পটল উৎপাদন এবং পোকা-মাকড় ও রোগ দমনে আইপিএম পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কার্যকর পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

(একেএমজি/এএস/আগস্ট ১২, ২০২২)