আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া থেকে তেল কিনে এর উৎস গোপন করে, সেটি পরিশোধনের পর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোয় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ মার্কিন প্রশাসন। কারণ, এতে মস্কোর ওপর ওয়াশিংটনের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন হয়েছে। গত শনিবার (১৩ আগস্ট) ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স ও ব্লুমবার্গের।

রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্র ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, মার্কিন রাজস্ব বিভাগ ভারতকে বলেছে, একটি ভারতীয় জাহাজ গভীর সমুদ্রে একটি রুশ ট্যাংকার থেকে তেল নিয়ে গুজরাটের বন্দরে যায়। সেখানে তা পরিশোধন করে আবার সাগরে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, পরিশোধিত পণ্যটি আবার জাহাজে তুলে দেওয়া হয় এবং সেটি কোনো গন্তব্য ছাড়াই যাত্রা করে। মাঝসমুদ্রে জাহাজটি গন্তব্য জানতে পারে এবং সেইমতে নিউইয়র্কে পৌঁছায়। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগপ্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার তেল, গ্যাস, কয়লাসহ সবধরনের জ্বালানি আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাকিদেরও রুশ জ্বালানি কেনা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। তবে সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি পুরোনো মিত্র ভারত।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি আগে রাশিয়া থেকে খুব সামান্যই তেল আমদানি করতো। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশাল মূল্যছাড় পেয়ে রুশ তেল আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। ভারত এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ চাহিদার চাপের কথা বললেও তাদের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ পশ্চিমা দেশগুলো।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পরপরই রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত জ্বালানি, পাতন, কয়লা ও গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র।

মাইকেল পাত্র বলেছেন, তাকে জানানো হয়েছে, রুশ তেল প্রক্রিয়াজাত করে পাতন পদার্থে রূপান্তর করা হয়েছিল, যা একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

তবে ভারতের কোন জাহাজে ওই তেল ওঠানো হয়েছিল, তা কোন পরিশোধনাগারে যায় কিংবা পাঠানো শিপমেন্টের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে কি না, এসব বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি ভারতীয় এ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে নয়াদিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

(ওএস/এএস/আগস্ট ১৫, ২০২২)