মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার জেলার ৯২টিসহ দেশের মোট ১৬৭টি চা বাগানে ৩শ টাকা মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে চা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। সঙ্কট নিরসনে মঙ্গলবার চা শ্রমিকদের সাথে সমাধানে শ্রীমঙ্গলের শ্রম অধিদপ্তরে আসেন শ্রম অধিদপ্তরের মহা পরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। তিনি শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসে আন্দোলন স্থগিত করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানালে সাধারণ চা শ্রমিক ও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তা প্রত্যাখান করে ফের আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন। এমন পরিস্থিতিতে চা শিল্পে সঙ্কট আরো প্রকট আকার ধারন করবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দূপুর ১২টার দিকে পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর শ্রীমঙ্গলের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুর রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা সহ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী জানান, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া শুনেন। ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য চা শ্রমিক নেতাদের অনুরোধ করেন। প্রতিদিন ৮ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে চা বাগান মালিকদের। ৩শ টাকা মজুরীর বিষয়ে তিনি বাগান মালিকদের সঙ্গে আগামী ২৩ আগষ্ট ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে চা শ্রমিকদের মজুরীর বিষয়ে কথা বলবেন।

তবে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন জানান, তারা যে পর্যায়ে আছেন সেখান থেকে ফেরা সম্ভব না। তারা বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সেখান থেকে মজুরী বৃদ্ধির ঘোষণা আসা ছাড়া ফেরা সম্ভব নয়।

এদিকে প্রতিদিন লাফিয়ে উঠা দ্রব্যমূল্যের সাথে চা শ্রমিকদের বর্তমান মজুরী ১শত ২০ টাকা অমানবিক হিসেবে মনে করছেন অনেকে। শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন যৌক্তিক দাবি করে সোস্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করে সংহতি জানাতেও দেখা গেছে।

উল্লেখ্য শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩শ টাকা করার দাবিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন গত ৯ আগষ্ট থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট ২ ঘন্ট করে পালন করে আসছেন। এর পর ১৩ আগষ্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস চা শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হয়। ১৪ ও ১৫ আগষ্ট ২ দিন স্থগিত থাকার পর ১৬ আগষ্ট পূর্ণদিবস ধর্মঘট পালন করে ও বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের সাথে সমজুতার বৈঠক হয়। দেশের ১৬৭ টি চাবাগানের মতো মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানের শ্রমিকরা অংশ নিচ্ছে এই ধর্মঘটে।

(একে/এসপি/আগস্ট ১৬, ২০২২)