স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার সভারের আশুলিয়ায় কমার্স ব্যাংকে ডাকাতির সময় ৮ জনকে হত্যার দায়ে ছয়জনকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশরাফুল হক জর্জ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানার পুলিশ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। তাদের মধ্যে বাবুল সরদার, মিন্টু প্রধান, উকিল হাসান ও শাহজাহান জমাদার ছাড়া অন্য সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল দিন-দুপুরে আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের গুলি ও চাপাতির কোপে ওই ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ওয়ালি উল্লাহ, দুই নিরাপত্তা প্রহরী কাজী বদরুল আলম ও ইব্রাহীম, ব্যাংকের গ্রাহক সাহাবুদ্দিন পলাশ, স্থানীয় ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদসহ আটজন নিহত হন।

ব্যাংকের ভল্টে থাকা ছয় লাখ ৮৭ হাজার ১৯৩ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পালিয়ে যাওয়ার সময় বোরহান উদ্দিন ও সাইফুল নামের দুই ডাকাতকে জনগণ হাতেনাতে ধরে ফেলে মারধর করে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাবুল সরদার ও মিন্টু প্রধানকে আটক করে পুলিশ। পরের দিন ব্যাংকের কর্মকর্তা ফারদিন হাসান আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।

এ মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩১ মে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান। রায়ে জঙ্গিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। একজনকে যাবজ্জীবন ও অন্য দুই আসামিকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অন্য দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বোরহান উদ্দিন, সাইফুল ওরফে আল-আমিন, মিন্টু প্রধান, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মাহফুজুল ইসলাম ওরফে সুমন ও পলাশ ওরফে সোহেল রানা।

আসামি উকিল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আবদুল বাতেন ও শাহজাহান জমাদারকে তিন বছর করে কারাদণ্ড এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাবুল সরদার ও মোজাম্মেল হককে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এসব বিষয়ে শুনানি শেষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত উকিল হাসানকে খালাস দিয়ে বাকিদের দণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

(ওএস/এএস/আগস্ট ১৭, ২০২২)