তুষার কান্তি বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর দেয়া গতকালকের বক্তব্যকে মিডিয়া ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন. দেশে সবার বাক স্বাধীনতা রয়েছে। তাই সবাই সব কথা বলতে পারেন। তবে বক্তব্য অন্যভাবে উপস্থাপন হলে দুঃখ লাগে। তিনি মিডিয়াকে একটু সহনশীল হওয়ার অনুরোধ জানান।

আজ শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পক্ষে গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শোকাবহ আগস্টের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ অনুরোধ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, গতকাল আমি বলেছি শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমাদের দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে। অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুললে সবার মঙ্গল হবে। আর এদেশে যত নাগরিক আছে সে যেকোনো ধর্মের হোক সবার সমান অধিকার। শেখ হাসিনা যদি সরকারে থাকেন তাহলে স্থিতিশীলতা থাকে। আর স্থিতিশীলতা থাকলেই আমাদের উনয়নের মশাল অব্যাহত থাকবে।

পাররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আসামে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনাকে ধন্যবাদ। আমি বলেছি কেন? তিনি বলেছেন কারণ শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেই সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছেন। এছাড়া সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় না দেয়া আহবান জানিয়েছেন। এসব কারণে আসাম ও মেঘালয়ে সন্ত্রাসী তৎপরাতা নেই। তাদের দেশে বহু উন্নয়ন হচ্ছে। ইনভেস্টমেন্ট আসছে। শেখ হাসিনার আহবানে এটা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছি, আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী স্থীতিশীলতার কথা বলেছে। স্থীতিশীলতায় আমাদের দেশেরও মঙ্গল হচ্ছে। আপনার দেশেরও মঙ্গল হচ্ছে। ব্যবসা বানিজ্য ভাল হচ্ছে। সুতরং স্থীতিশীলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এ অঞ্চলে কোন ধরনের অস্থিতিশীলতা চাই না। এটা যদি আমরা করতে পারি তা হলে সোনালী অধ্যয় যথার্থ হবে। ভারতকে বলেছি, কিছু কিছু লোক সময় সময় উস্কানী মূলক কথা বলে। আপনদের দেশে যেমন দুষ্ট লোক আছে, আমাদের দেশেও আছে। তারা তিলকে তাল করে। আপনাদের ও আমদের সরকারের দায়িত্ব আছে। তিলকে তাল করার সুযোগ সৃষ্টি করে না দেওয়া। তা হলে আমরা পারস্পারিক সম্প্রিতি বজায় রাখতে পারব। কোন ধরনের অস্থিরতা থাকবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি সব সময় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চান বলেও ভারতে বলেছি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের জনগণ খুব কষ্টে আছে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেল। যে তেল ৯০ টাকা ছিল সেটা হয়ে গেল ১৫০ টাকা। আমি এটা কোনভাবে অংকে মেলাতে পারি না। সর্বমোট ডিজেলের দাম বেড়েছে ২৮ টাকা প্রতি লিটারে। দাম ধরা উচিত ছিল এক টাকা বা কয়েক পয়সা। কিন্তু একি কা-! যে এত দাম! সবকিছুর দাম হুহু করে বেড়ে উঠলো। আমরা এই জন্য খুব উদ্বিগ্ন। শেখ হাসিনার সরকার সাধারণ মানুষের বন্ধু। আমরা সরকারে আছি সাধারণ লোকের জন্য। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেইটা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ইসরাইলে যখন যুদ্ধ হয় তেলের দাম বাড়ে আর পৃথিবীতে খাদ্য ঘাটতি হয়। এখন ৫০ বছর পরে আমি তাজ্জব এখনো তেলের দাম বেড়েছে। যুদ্ধ একটা লেগেছে আর খাদ্য দ্রব্যেরও দাম বাড়েছে। এটা খুব আশ্চর্যের বিষয়। তবে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে কারন এ দেশটা আমাদের। দেশে যদি অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় তাহলে যারা অপপ্রচার করে তারাও ভালো থাকতে পারবে না।

এর আগে তিনি জাতির পিতার সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্প স্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে বঙ্গবন্ধু ও ৭৫ এর ১৫ অগেস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া- মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
এ সময় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(টিকেবি/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২২)