ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : যৌতুকের দাবীতে দুই সন্তানের জননী এক গৃহ বধুকে নির্যাতন করা হয়েছে। থানায় মামলা করলে আবার তালাকনামা প্রেরণ করা হয়েছে সেই গৃহবধূকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মাহতাবপুরের হারুনুর রশিদের ছেলে মিজানুরের সাথে ৫ বছর আগে বিয়ে হয় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের আলমগীর হোসেনের মেয়ে মিতুর সাথে। কিছুদিন তারা ঢাকায় অবস্থান করে। কিন্তু পারিবারিক চাপে তারা বাড়ি ফিরে আসে।

এসময় মিতুর কোল জুড়ে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান আসে। এরপর মিজানুরের পরিবার থেকে মিতুর পরিবারের কাছ থেকে ৮ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মিতু দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে এবং ৮ মাস অবস্থান করে। এসময় ছেলের পরিবার থেকে কোন খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি। অবশেষে মিতুর মা রোজিনা বেগম মিতুকে নিয়ে ৫ই আগষ্ট মিজানুরের বাড়ি যায়।

এসময় তারা মিতুকে দেখে আবারও যৌতুকের টাকা দাবী করতে থাকে। এসময় তারা অপারগতা প্রকাশ করলে পরিবারের উস্কানিতে মিজানুর বাঁশের লাঠি দিয়ে মায়ের সামনেই মেয়েকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে রোজিনা মেয়েকে উদ্ধার করে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

পরবর্তীতে ৭ই আগষ্ট রোজিনা বাদী হয়ে বীরগঞ্জ থানায় ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। এবং বীরগঞ্জ থানা পুলিশ ১ নম্বর আসামী মিজানুরককে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করে।

রোজিনা অভিযোগ করে বলেন, আসামী মিজানুর ও তার পরিবার চক্রান্ত করে তালাকনামায় আমার মেয়ের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আদালত থেকে জামিন নেয়। যে তালাকনামা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা।

রোজিনা আরো জানান, তারা যদি আমার মেয়েকে তালাক দিয়েছে। তাহলে আমার মেয়ে ও তার দুই সন্তানের দায়দায়িত্ব কে নেবে। আমি ৮ মাস থেকে তাদের নিয়ে আছি। আমার এই অভাবের সংসারে আমার নিজেরি চলতে অনেক কষ্ট হয়।

তারপর মেয়ে ও তার দুই সন্তান, এদের নিয়ে আমি অনেক কষ্টে আছি। মাঝে মাঝে মনে হয়, সহ পরিবারে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করি। কিন্তু মাসুম বাচ্চা দুটোর মুখ দেখে কিছু করতে পারছি না। আমি পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি, আদালতের কাছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

(এফআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২২)