একে আজাদ ও মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, পাংশা সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন পরবর্তী প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ।

গত শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি বোর্ডের যৌথসভা শুরু হয়।

এ সভায় দেশের মোট ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ও জাতীয় সংসদের গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে চূড়ান্ত দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। এতে ৩১ জেলাতেই নতুন মুখ দিয়েছে মনোনয়ন বোর্ড। রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ নাম উল্লেখ করা হয়। এ জেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান আছেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফকির আব্দুল জব্বার।

উল্লেখ্য মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা আওয়ামী লীগ ও রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মরহুম গওহার উদ্দিন মন্ডল এর ছেলে একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ।

একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজের ৬ ভাই ও ৯ বোনের সবাই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। ছোট ভাই আমিরুল মোরশেদ খসরু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক। ছোট বোন উম্মে সালমা তানজিয়া বর্তমানে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক(যুগ্ম-সচিব) এবং ফরিদপুরের সাবেক সফল জেলা প্রশাসক। তার (তানজিয়া) স্বামী মোঃ মোখলেছুর রহমান ঢাকা সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরের পরিচালক(যুগ্ম-সচিব) এবং গোপালগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক। আরেক ছোট ভাই শরিফুল মোর্শেদ রঞ্জু পাংশা সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক এবং কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। অন্যান্য ভাই-বোনদের মধ্যে প্রকৌশলী রফিকুল মোরশেদ সুরুজ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে কর্মরত, বোন সাজেদা খাতুন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা, মরহুমা সাহিদা আহমেদ পাংশা উপজেলা পরিষদের দুই দুইবার নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, আনজু মনোয়ারা খাতুন ঢাকার মোহাম্মদপুরে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত রাবেয়া গওহার স্কুলের অধ্যক্ষ, শাহনাজ বেগম কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আসমাউল হুসনা বরিশাল বিএম কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এবং মমতাজ বেগম গৃহিনী।

পাংশা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী পরিবারের সন্তান একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতের পর দলের চরম দুঃসময়ে তিনি পাংশা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসেবে সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উক্ত হল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জি.এস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর) সম্পন্ন করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি পাংশা কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক পদে যোগদান করেন এবং একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত একটানা ২৩ বছর পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে এবং ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জেলা ও পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ২পুত্র ও ১কন্যা সন্তানের জনক। বড় ছেলে তানজিম মোরশেদ অন্তু বিডিএস ডিগ্রী অর্জনের পর বর্তমানে ডেন্টিস্ট (দন্ত চিকিৎসক) হিসেবে ইন্টার্নী করছেন। ছোট ছেলে তানজীদ মোরশেদ অমি রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং একমাত্র মেয়ে তানজিলা মোরশেদ অবন্তী ঢাকার হলি ক্রস কলেজে অধ্যয়নরত। স্ত্রী লুবনা নাসরিন বাঁশআড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

রাজনৈতিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন। তিনি পাংশা শাহ জুঁই কামিল মাদ্রাসা, হাবাসপুর কে.রাজ উচ্চ বিদ্যালয়, চর ঝিকরী মকবুল হোসেন দাখিল মাদ্রাসা, পাংশা সৈয়দ বায়তুল্লাহ কিন্ডার গার্টেন ও পাংশা পুরাতন বাজার বাইতুন নূর জামে মসজিদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সাথে জড়িত।

(একেএমজি/এএস/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২)