স্টাফ রিপোর্টার : দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক যেকোনো আইন সংশোধন করতে চান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসুন, বিনিয়োগ করুন।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি হোটলে ‘হংকং হয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ (Exploring business and investment opportunities for Bangladesh via Hong Kong) শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বেশি। এখানের বাজার অনেক বড়, বাণিজ্যের সম্ভাবনাও বেশি। ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগের প্রয়োজনে আমরা যেকোনো আইন সংশোধন করতে রাজি আছি।

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ভারত সফরে সে দেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশের সিমেন্ট, কাচ জাতীয় পণ্যের বড় বাজার হতে পারে হংকং। যোগ করেন মন্ত্রী।

বাণিজ্য সম্প্রসারণে সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান এইচকেটিডিসি ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, হংকং ও বাংলাদেশের মধ্যে মসৃণ দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রয়েছে। হংকং বাংলাদেশের বিশ্বস্ত শীর্ষ ১০ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি। তৈরি পোশাক ও জ্বালানি খাতে তারা এখন পর্যন্ত ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও হংকংয়ের অর্থনৈতিক বন্ধনকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পারস্পরিক বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যের সুযোগ অন্বেষণ করতে পারে। এতে এইচকেটিডিসি সংযোগকারী সেতু হতে পারে। বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা এইচকেটিডিসির মাধ্যমে হংকংয়ে বাণিজ্যের সম্ভাবনা ব্যবহার করতে পারে।

তিনি বলেন, ঢাকা চেম্বার ও এইচকেটিডিসি একটি আকর্ষণীয় কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।

সেমিনারে বাংলাদেশ ও হংকংয়ে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন এইচকেটিডিসির কনসালটেন্ট রাজেশ ভাগাত। তিনি বলেন, বিশ্বের ১০০ বৃহৎ ব্যাংকের মধ্যে ৭০ টিই হংকংয়ে। দেশটিতে ব্যবসায় কোনো প্রকার সেলস, হোটেল ট্যাক্স ও কাস্টমস ট্যারিফের প্রয়োজন হয় না।

অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ১০ শতাংশ ট্যাক্স হলিডে, রপ্তানি প্রণোদনা, কর মওকুফ, হাইটেক পার্কের সুবিধা পেয়ে থাকেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (ইআরডি) শরিফা খান বলেন, হংকংয়ের জনসংখ্যা বাংলাদেশের গুলশানের চেয়েও কম। কিন্তু তাদের অর্থনীতি অনেক বড়। এই পার্থ্যককে ব্যবসায়িক সুযোগে পরিণত করতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ম্যানুফেকচারিং হাব। আমাদের এখানে পণ্য উৎপাদন করে ব্যবসায়ীরা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারেন, কেননা হংকং বিশ্বের বাণিজ্য হাব। হংকংয়ে যেহেতু জনসংখ্যা কম, তাই বাংলাদেশের কর্মশক্তির বড় সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২)