মাগুরা প্রতিনিধি : জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা দায়ের করায় মামলার বাদী মাগুরার শালিখা উপজেলার হাটবাড়িয়া গ্রামের মনিকুমার ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের গ্রাম থেকে একঘোরে করে রেখেছে মামলার বিবাদী প্রশান্ত বিশ্বাস গং, গ্রামের মাতুব্বর  অসিত বৈরাগী ও তার দলবল। শুধু তাই নয় মামলা প্রত্যাহার করার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকারের চাপসহ জীবন নাশের হুমকী প্রদান করছে প্রশান্ত বিশ্বাস, অসিত বৈরাগী ,রাজকুমার বিশ্বাস সহ তাদের লোকজন। ফলে মামলার বাদী পাগল চাঁদ , হরিশ চন্দ্র, মনিকুমার ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্যদিকে, বিবাদীরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মান করছে পাকা ঘর। যা আইনের পরিপন্থি।

মামলা সুত্রে জানা যায়, মাগুরার শালিখা উপজেলার হাট বাড়িয়া গ্রামের মনি কুমার বিশ্বাস, পাগল চাঁদ বিশ্বাস, হরিশ চন্দ্র বিশ্বাস ও সত্যবান বিশ্বাস এর পৈত্রিক সুত্রে প্রায় সাড়ে ছয় একর জমি বসত ভিটাসহ জাল ছলের মাধ্যমে একই গ্রামের প্রশান্ত বিশ্বাস , খোকন গং সহ জোর পূর্বক দখল করে আসছে। ফলে বাদী পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পেতে মাগুরা সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এতে প্রশান্ত গং গ্রামের লোকজন একত্রে হয়ে শালিশ বৈঠকের নাম করে পাগল চাঁদ ও হরিশ চন্দ্র সহ বাদী পক্ষকে মিটিংয়ে ডেকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে তার ভাইয়েরা মামলা তুলতে অস্বীকার করলে গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাস , অসিত বৈরাগী সহ একাধিক লোকজন বাদী ও তাদের পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন প্রকারের হুমকী প্রদান করে। এমনকি মামলা তুলে না নিলে বাদীর জীবন নাশ করবে বলেও হুমকী দেয়। নিরূপায় হয়ে বাদী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শালিখা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। অন্যদিকে বাদীর পরিবারকে শায়েস্তা করতে গ্রাম থেকে একঘোরে করে রেখেছে বিবাদীরা।

মামলার বাদী হরিশ চন্দ্র , মনি কুমার ও সত্যবান বিশ্বাস জানান আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জাল ছলে করে প্রায় সাড়ে ছয় একর জমি জোর পূর্বক দখল করে ভোগ দখল করছে খোকন ও প্রশান্ত গং। ফলে আমরা সম্পত্তি ফিরে পেতে শালিখা জজ আদাদালতে একটা মামলা দায়ের করি । যার মামলা নং- ৩১১/১৮। পরবর্তীতে মাগুরা সদর জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। যার মামলা নং – ২৯২/১৮। মামলা করায় বিবাদীরা ষড়যন্ত্র করে গ্রাম্য শালিস বৈঠক ডেকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। আমরা মামলা তুলতে অস্বীকার করায় গ্রামে আমাদের একঘরে করে রেখেছে। আমাদের বা আমাদের পরিবারের সদস্যদের কোন প্রকার সামাজিক কাজে বা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়না। শুধু তাই নয় তারা আমাদের মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন প্রকার হুমকী প্রয়োগ করে চলছে। নিরূপায় হয়ে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শালিখা থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করি। যার জিডি নং ৩৬৬/ ২২। এর পরও বিবাদী রা প্রতিনিয়ত হুমকী প্রর্দশন করছে। ফলে বর্তমানে আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। সেই সাথে প্রশাসনের উর্ধতন কতৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করছি।

এ ব্যাপারে সরজমিনে হাটবাড়িয়া গ্রামে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু ব্যক্তি জানান, জাল ছলের মাধ্যমে মনি কুমার গং দের সম্পত্তি দখল করে আবার তাদেরই কিভাবে একঘোরে করে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এছাড়া গ্রামের সকল সমাজ সামাজিকতায় বাদীদের ডাকা হয়না। এটা বর্তমান আইনের পরিপন্থী। আমরা এলাকায় শান্তি চায়।

মামলার বিবাদী প্রশান্ত জানান খোকন বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তারা ভুবন বিশ্বাসের এক শরিক জয় গোপালের নিকট থেকে ১৯৭০ সালে আমার পিতা কৃষ্ণ পদ বিশ্বাস ছলের মাধ্যমে আট আনা সম্পত্তি ক্রয় করে। আমরা ওয়ারেশ সুত্রে সম্পত্তির ভোগ দখল করে আসছি। খোকন গং দের সম্পত্তি কত টুকু এবং কয় দাগে কতো শতাংশ তা জানতে চাইলে খোকন এবং প্রশান্ত উভয়ই তার সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। তারা বলেন আমাদের কাগজ পত্রেই আছে । আমরা সঠিক ভাবে বলতে পারবো না।

গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন - আমরা গ্রামে শান্তি রক্ষার জন্য শালিস বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু মামলার বাদী আমাদের অপমান করায় তাদের কে সমাজিক কাজ থেকে বয়কট করেছি। তবে এঘোরে করা হয়নি। তারা গ্রামের লোকজনদের কে কোন সামাজিক কাজে ডাকে না। গ্রামের কোন অনুষ্ঠানে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়না কেন ? জানতে চাইলে গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাস তার উত্তর দিতে পারেন না।

এ ব্যাপারে বুনাগাতী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বখতিয়ার উদ্দিন লস্কর জানান যেহেতু বাদীর সমস্ত ডকুমেন্ট আছে। সেহেতু বাদী আদালতের শরনাপন্ন হয়েছে।

(ডিসি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২)