কেন্দুয়া প্রতিনিধি : দরপত্রের নিয়ম ও চুক্তি মোতাবেক সময়সীমা শেষ হয়ে ৯ মাস পার হলেও অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের নির্মান কাজ শুরুই হয়নি নামধর ভূঞা বাট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের নামধর ভূঞা বাট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একটি জরাজীর্ণ ভবন। যে কোন সময় ধসে গিয়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দূর্ঘটনা। বিদ্যালয় ভবনটিতে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নতুন ভাবে নির্মানের জন্য যথানিয়মে দরপত্র আহবান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। কিন্তু ঠিকাদারের চরম উদাসিনতায় কাজের সময়সীমা পেরিয়ে ৯ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও কাজই শুরু হয়নি। এতে একদিকে যেমন সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড হারাচ্ছে গতিশীলতা অপর দিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে সুষ্ঠু ভাবে পাঠগ্রহণের পরিবেশ থেকে। 

জানা যায়, নামধর ভূঞা বাট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণি কক্ষ নির্মানের জন্য পিইডিপি- ৪ প্রকল্পের আওতায় গত ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর দরপত্র আহবান করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী। এতে ২৪.৪৮% নি¤œদরে সারোয়ার জাহান, জাহাঙ্গীরপুর, মদন, নেত্রকোণা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মানের কাজটি পায়। কাজের প্রক্কলিত মূল্য ৭৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৭০ টাকা। সে মোতাবেক ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ বা চুক্তি সম্পাদন হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানাযায়, চুক্তিমোতাবেক কাজ সম্পাদনের শেষ তারিখ ছিল ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর।

কিন্তু অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মানের কাজটি চুক্তিমোতাবেক সম্পন্ন করার জন্য সারোয়ার জাহান, জাহাঙ্গীরপুর, মদন, নেত্রকোণার কাছ থেকে প্রাপ্ত ঠিকাদারকে ২০২১ সালে ১১ জুলাই থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলীর স্বাক্ষরিত ৫টি তাগাদাপত্র দেওয়া হলেও ঠিকাদার তাতে কোন কর্ণপতাই করছেননা। কাজ সমাপ্তির নির্ধারিত তারিখের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কাজই শরু হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকগণ অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণি কক্ষের নির্মান কাজটি যথা সময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করছে। এতে যে কোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনার আশংকায় রয়েছেন তারা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেন্দুয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মোজাম্মেল হোসেন সোমবার জানান, যথা নিয়মে এবং সময়ে অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষের কাজটি সম্পন্ন করার জন্য মৌখিকভাবে বার বার এবং লিখিত ভাবে ৫ বার তাগাদাপত্র দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার বরাবরই কাজটি করার প্রতিশ্রুতি দিলেও কাজের কাজ কিছুই করছেন না। এতে একদিকে যেমন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের গতি হারাচ্ছে, অপরদিকে বিদ্যালয়টির কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু পাঠ গ্রহণ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

ঠিকাদার তোফায়েল আহমেদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ নির্মানের কাজটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মালামাল রাখা হয়েছে। তবে আমি গুরুতর অসুস্থ হয়ে আইসিওতে থাকায় কাজটি শুরু করতে পারিনি। তাই কাজটি যথা সময়ে শেষ হয়নি। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজটি আমি সম্পন্ন করার জন্য প্রাণপন চেষ্ঠা চালাচ্ছি।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২