আবু নাসের হুসাইন, সালথা : ফরিদপুরের সালথায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ধানের ঘন সবুজের পাতা ও কাঁচা শীষ দোল খাচ্ছে। ধানের কাঁচা শীষের এমন চিত্র দেখে আনন্দে চাষীদের বুক ভরে উঠছে। এবছর উপজেলায় ১১ হাজার ৫শ ৭৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছেন। 

জানা যায়, এবার পানি না হওয়ায় পাটের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে ধানের উপর গুরুত্ব দেন চাষীরা। প্রথম দিকে ধান আবাদ করতে গিয়েও বিপাকে পড়েন তারা। সেচ দিয়ে ধানের বীজ বপন ও ধানের চারা রোপন করতে হয়েছিল তাদের। পরে প্রচন্ড খড়ায় ধানের বীজ ও চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এই সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে টানা বৃষ্টি হওয়ার পর ধানের গাছ সতেজ হয়ে ওঠেছে। বৃষ্টির পর ধান ক্ষেত পরিচর্যা ও কীটনাশক দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে চাষীরা। কয়েকদিন পরেই পাকা ধান ঘরে আসবে, এই স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা।

উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চান্দাখোলা গ্রামের চাষী আওয়াল মোল্যা ও দেলোয়ার মোল্যা বলেন, পানি না থাকায় এবছর পাটের মান তেমন ভালো হয়নি। মুল্যেও কম পেয়েছি। পাটে কোন লাভ হয়নি। পাটের ক্ষতি পূরণ করতে ধান চাষে আগ্রহ হই। তাই বেশি টাকা খরচ করে পাটের মধ্যেদিয়ে জমিতে সেচ দিয়ে ধান আবাদ করেছি। ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।

ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের ধান চাষী কাইয়ুম মোল্যা বলেন, এবার বৃষ্টি ও পানি না হওয়ায় প্রথমে পাটের মধ্যেদিয়ে ধানের বীজ বপন করি। প্রচন্ড খড়ার কারনে ধানের বীজ নষ্ট হয়ে যায়। সেচদিয়ে দ্বিতীয়বার ৫বিঘা জমিতে ধানের বীজ বপন করি। তারপরও ধানের গাছ ভালো হয়নি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধান গাছ বেড়ে ওঠেছে। এখন ধান গাছ যে অবস্থায় আছে তাতে আশা করছি ধানের ফলন অন্যান্য বছরের চেয়েও ভালো হবে।

বারখাদিয়া গ্রামের ইমদাদুল মোল্যা বলেন, এবছর সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। বৃষ্টি না থাকায় প্রথমদিকে ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হওয়ার পর ধান গাছের গঠন খুব ভালো হয়েছে। এখন ধানের শীষ বের হতে শুরু করেছে। আল্লাহুর রহমতে এবার ধানের ফলন খুব ভালো হবে ইনশাল্লাহ।

উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, এবছর উপজেলায় ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১১ হাজার ২৪৭ হেক্টর। তা অতিক্রম করে ১১ হাজার ৫শ ৭৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। বর্তমানে ফসলের অবস্থা খুব ভালো আছে। নিয়মিত কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি এবার ফলনও ভালো হবে।

(এএন/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২)