রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এড. মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এ পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিনাভোটে তাঁকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন আরও দুজন। তাদের মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের দিনে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগে এড. বাবর আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। অপর প্রার্থী এসএম আবু সায়েম রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।

এডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ একাধারে কবি আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৫৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলছিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এম. এ. সামাদ ও মায়ের নাম জহুরা খাতুন।

পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। ১৯৮৫ সালের ৯ আগস্ট ডা. সাজদা-ই-জান্নাতকে জীবন সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পিতার কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির মাধ্যমে তার শিক্ষা জীবনের শুরু।

তিনি নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক; আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের অধীনে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।

তিনি জামালপুর জেলা জজ আদালতের নিয়মিত আইনজীবী। ২০০৭, ২০০৮, ২০১১ ও ২০১৯ সালে জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৯৫ সালে। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের তালিকাভুক্ত আইনজীবী।

স্কুলজীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজে অধ্যয়নকালীন ১৯৭৯-৮০ ও ১৯৮০-৮১ সালে দুই মেয়াদে ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একই সময়ে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি। তিনি ১৯৯০ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক
সম্পাদক পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ১৯৯১-৯৬ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯৬-২০১১ সালে সহ-সভাপতি, ২০১১-২০১৫ সালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ২০১৫ সাল থেকে অদ্যাবধি জেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৮৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর কবিতার বই 'লাবণ্যে জড়ানো পাপ'। বইটি দেশে অত্যন্ত পাঠকপ্রিয়তা পায়। তিনি নারায়ণগঞ্জে অবস্থানকালীন ড্যাফোডিল কবিতাগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামালপুর কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার কাঠামোর মধ্য থেকে আমাদের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীসহ জনসেবা বিষয়ে যেসব কর্মসূচি চলমান রয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া জনবান্ধব যে কোনো পদক্ষেপে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া হবে যাতে জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের ভাবমূর্তি অধিকতর উজ্জ্বল হয়।

(আরআর/এএস/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২)