স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাটের কচুয়া ও মোড়লগঞ্জের খান আশরাফসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মামলায় মোট ১১ জন আসামির মধ্যে চারজন গ্রেফতার হয়ে করাগারে রয়েছেন। বাকি সাতজন পলাতক।

এ মামলায় মোট ১৪ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা পাঁচজন হলেন- খান আকরাম হোসেন (৬০), শেখ মোহম্মদ উকিল উদ্দিন (৬২), ইদ্রিস আলী মোল্লা (৬৪), মো. মকবুল মোল্লা (৭৯) ও মো. আব্দুল আলী মোল্লা (৬৫)। তবে মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আগেই এক আসামি মারা যান।

তখন পলাতক ছিলেন ৯ আসামি- খাঁন আশরাফ আলী (৬৫), সুলতান আলী খাঁন (৬৮), মকছেদ আলী দিদার (৮৩), শেখ ইদ্রিস আলী (৬১), শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল (৬৪), রুস্তম আলী মোল্লা (৭০), মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদার (৬৯), মো. হাশেম আলী শেখ (৭৯) ও মো. আজাহার আলী শিকদার (৬৪)।

তাদের মধ্যেও আরও দুজনের মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে মামলার পলাতক আসামির সংখ্যা কমে সাতজন হয়েছে। পলাতক ও গ্রেফতার মিলিয়ে এখন মামলায় মোট আসামি সংখ্যা ১১ জন।

এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী, রেজিসয়া সুলতানা চমন, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার শেখ মুশফেক কবীর। অন্যদিকে কারাগারে থাকা চার আসামির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম।

২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ওই বছরের ২৮ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।

এর আগে ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর কারাগারে থাকা পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আসামিরা সবাই মুসলিম লীগ ও পরে জামায়াতের সমর্থক হিসেবে রাজাকার-আলবদর বাহিনীতে যোগ দেন। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২)