আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও মস্কোর নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে গণভোট হচ্ছে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভোট শুরু হয়। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা। এদিকে গণভোটের শেষ দিনে ইউক্রেন ও রুশ সেনাদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতেই এই ভোটের আয়োজন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে, পূর্ব দোনেৎস্ক তার দেশের কৌশলগত কারণে অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে। রুশ সৈন্যরা দক্ষিণ এবং পশ্চিমে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে এবং কয়েকটি শহর ঘিরে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়াও উত্তর-পূর্বের খারকিভ অঞ্চলে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। চলতি মাসে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই অঞ্চল। খবর মিলছে, কোনো প্রদেশই পুরোপুরি মস্কোর নিয়ন্ত্রণে নেই এবং পুরো ফ্রন্ট লাইনে যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী চলতি মাসের শুরুর দিকে খারকিভ প্রদেশে রুশ সৈন্যদের পরাজিত করার পর থেকে লড়াই আরও তীব্র হয়েছে।

ইউক্রেনীয় বাহিনী দক্ষিণে রুশ বাহিনীর সরবরাহ লাইন ব্যাহত করার জন্য চারটি সেতু এবং অন্যান্য নদী পারাপারে বিঘ্ন ঘটাতে অভিযান চালায়।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ড মঙ্গলবার জানিয়েছে যে, খেরসনে তাদের পাল্টা আক্রমণের ফলে শত্রুদের ৭৭ সেনা নিহত হয়েছেন। ছয়টি ট্যাঙ্কসহ বেশি কিছু সরঞ্জাম ধ্বংস হয়েছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির এসব খবর তাৎক্ষণিকভাবে খতিয়ে দেখতে পারেনি রয়টার্স।

রুশ-সমর্থিতরা শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার (২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর) লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা দেয়। যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ ভূখণ্ড বা হাঙ্গেরির আয়তনের সমান এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার মাটি রক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার একটি প্রচ্ছন্ন হুমকি জারি করেছেন। যেখানে গণভোটে জয়ী হলে এই চারটি অঞ্চলও অন্তর্ভুক্ত হবে। হয়তো শিগগির এই গণভোট রাশিয়ার পার্লামেন্টও অনুমোদন দেবে।

তবে কিয়েভ ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এই গণভোটের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ভোটে রাশিয়ার পক্ষে ফলাফল অনিবার্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার গণভোটে কারচুপি হয় বলে বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির পক্ষে ৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট পুতিন চলতি সপ্তাহে ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঠে আরও ৩ লাখ সেনা নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন। দেশটিতে সেনা সমাবেশ ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিক্ষোভ। তবে রিজার্ভ সেনা ডাকার ক্ষেত্রে কিছু ভুল করেছে ক্রেমলিন। সেসব ভুলের বিষয়টি ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে স্বীকারও করা হয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের জারি করা ডিক্রি লঙ্ঘন করার কিছু ঘটনা রয়েছে। তবে সব ভুল সংশোধন করা হবে’।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২)