আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের অধিকৃত চার অঞ্চলকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মস্কো থেকে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। পুতিন বলেছেন, ওই চার অঞ্চলের জনগণ তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ফলাফল সবারই খুব ভালোভাবে জানা। খবর বিবিসির।

ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসনকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রশ্নে গণভোট শুরু হয়েছিল গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর)। পাঁচদিন ধরে চলে এই ভোট। এতে ব্যালটবক্স নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যান রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া নির্বাচনী কর্মকর্তারা। গণভোটে ৯৬ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে মত দিয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো। যদিও এই ভোট এবং এর ফলাফল অস্বীকার করেছে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা।

শুক্রবারের ভাষণে পুতিন বলেছেন, আমি নিশ্চিত, ফেডারেল অ্যাসেম্বলি রাশিয়ার চারটি নতুন অঞ্চল রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্তির বিষয়কে সমর্থন করবে... কারণ এটি লাখ লাখ মানুষের ইচ্ছা।

এরপর ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ওই অঞ্চলগুলোর জন্য রাশিয়ার অনেক প্রজন্ম লড়াই করেছে।

এসময় যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন পুতিন। তিনি বলেন, বিশেষ অভিযানে সাহসী সৈন্যরা নিহত হয়েছেন। তারা রাশিয়ার নায়ক।

এসময় ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে হুমকি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি চান কিয়েভ ও পশ্চিমারা যেন শোনে, ডনবাস অঞ্চল (লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক নিয়ে গঠিত) চিরকালের জন্য রাশিয়ার হবে। আর রাশিয়া তার ভূখণ্ডকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করবে।

তিনি জানান, অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত শহর ও গ্রাম পুনর্নির্মাণ করা হবে। সেখানকার অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।

শুরু থেকেই এই গণভোটকে অবৈধ বলে আসছে ইউক্রেন ও তার মিত্র পশ্চিমারা। অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার সীমানাভুক্ত করতে এই গণভোটের ‘নাটক’ সাজানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।

এই চারটি অঞ্চল ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। রাশিয়া সেগুলোকে নিজের সীমানাভুক্ত করার পর দাবি করতে পারবে, ইউক্রেনকে দেওয়া ন্যাটো জোট ও পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র দিয়ে তাদের ভূখণ্ডে আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

সম্প্রতি মস্কো আরও তিন লাখ বাড়তি সৈন্যকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য তলব করেছে। রাশিয়া প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ রণক্ষেত্র প্রতিরক্ষায় এদের মোতায়েন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর নিজস্ব ভূখণ্ড রক্ষায় প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দিয়ে রেখেছে ক্রেমলিন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২)