নবী নেওয়াজ, পাবনা : ৩ অক্টোবর সোমবার দুপুরে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক  আহসান তারেক পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে এক ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন, একই সাথে আসামিদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক, আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও সৈয়দ আলী রেজা পারভেজ।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হল- ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে শাহীন আহমেদ, ছোট গোলকাটা গ্রামের মুন্নাফের ছেলে আজম এবং কেনাই পশ্চিমপাড়া গ্রামের জয়নুল সরদারের ছেলে ও পুঙ্গুলি ইউপি সদস্য মুকুল সরদার। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন, পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার এজাহার ও চার্জশিট থেকে জানা যায়, নিহত মনিরুল ২০১৩ সালের ২১ জুন বিকেলে নিখোঁজ হোন, পরেরদিন ২২ জুন বিকেলে কেনাই মাঠের ফসলি জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে ফরিদপুর থানায় নিহতের বাবা ইসাহাক আলী খাঁ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবলীগ নেতা নিহত মামলার তদন্তে উঠে আসে ভিকটিম মনিরুল ও আসামিরা পরস্পর বন্ধু। কেনাই মাঠে তাদের মধ্যে জুয়া খেলার পর মনিরুল জিতে যায়। এ সময় জুয়ার টাকা নিয়ে অপর তিনজনের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মনিরুলকে গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ ফসলের মাঠে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। দীর্ঘ সাত বছরে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও তদন্ত শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, ফলে বিচারক তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করেছেন। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, মামলার অভিযোগে নাম না থাকলেও পরে চার্জশিটে তিন আসামিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাষ্টপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমার মক্কেলরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করছি সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাব।

(এনএন/এএস/অক্টোবর ০৩, ২০২২)