শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : স্পর্শকাতর মামলার স্বাক্ষী হয়ে এখন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, মো. বাবুল হোসেন। সম্প্রতি দিনাজপুরের দাইনুর কুনজকুড়ি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের তরুণ মিনার নিহতের ঘটনায় বিজিবি বাদি হয়ে ১১ জন চোরাকারবারির বিরুদ্ধে মামলা করে কোতয়ালী থানায়।

বাংলাদেশ পাসপোর্ট আইনের ১১ (১) ক ধারায় কোতয়ালী থানায় বিজিবি'র দায়ের করা (মামলা নং ৩৪,তাং-১৪-০৯-২০২২) মামলার প্রধান স্বাক্ষী এই মো. বাবুল হোসেন (৪৫)। দিনাজপুর দক্ষিণ কোতয়ালীর দাইনুর সোনাহারপাড়া গ্রামের মৃত নছির উদ্দিনের ছেলে বাবুল পেশায় একজন মৎস্য ব্যবসায়ী। সাহসী ও প্রতিবাদী স্বভাবের বাবুলের বাড়ি সীমান্ত লাগোয়া হওয়ার সীমান্তে সংঘটিত অধিকাংশ মামলার তাকে স্বাক্ষী বানানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারো স্পর্শকাতর এই মামলার স্বাক্ষী বানিয়েছে,বিজিবি। কিন্তু,তা কাল হয়ে দাঁড়িয়ে তার জীবনে।

এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়রি আজ মঙ্গলবার কোতয়ালী থানায় নথিভুক্ত করেছেন,বাবুল হোসেন। যার নং- ২৩৮, তাং-০৪-১০-২০২২।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে,সীমান্তে বাংলাদেশের তরুণ মিনার হত্যার পরবর্তীকালে ১১ চোরাকারবারির বিরুদ্ধে বোর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর দায়ের করা মামলার আসামী মো.মিজানুর রহমান (৩৮), মো. সুবেল হোসেন ((৪০), মো.রুবেল (৪২) ও গিয়াস উদ্দিন (৪৫), সর্বপিতা, দুখু মিয়া, সাং দাইনুর, কোতয়ালী, দিনাজপুর মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা এবং গ্রেফতারী পরোয়ানা আছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বাবুল হোসেন স্বাক্ষী হওয়ায় উভয়ে একজোট হয়ে নানান হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বাবুলকে। গেলো সোমবার সন্ধায় দাইনুর কালাইদিয়া বাজারে আসামীরা বাবুলকে মামলায় স্বাক্ষী থেকে বিরত থাকা এবং স্বাক্ষী দিবে না এই মর্মে এফিডেভিট করে দিতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় স্বাক্ষী বাবুলকে তারা সুযোগ বুঝে খুন করে লাশ সীমান্তের ওপারে ফেলে দিবে বলে হুমকি দেয়। এছাড়া বাবুলের বাড়িতে মাদক বা অন্য কোন অবৈধ মালামাল রেখে তাকে এবং তার পরিবারের স্ত্রী-সন্তানকে ফাসিয়ে দেয়ারও প্রকাশ্যে হুমকি দেয়। এছাড়াও আসামীরা বাবুলকে মারার জন্যে রাস্তায় লাঠি-সোটা নিয়েও দাঁড়িয়ে থাকে।

সোমবার সন্ধায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, বিজিবি এবং ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে প্রশাসনের সহায়তায় কালাইদিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরে বাবুল হোসেন।

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের সাথে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,আমাদের সহায়তা চাওয়ার সোমবার সন্ধ্যার পর বাবুল হোসেনকে আমাদের জওয়ানরা বাজার থেকে নিরাপদে বাসায় পৌছে দিয়েছেন।

যে স্পর্শকাতর মামলার স্বাক্ষী বাবুল হোসেন,সেই মামলার তদন্তকারী অফিসার এলআই ( বিজিবি) ফরিদ জানান,স্বাক্ষী,বাবুল হোসেন আমার কাছে এবিয়য়ে অভিযোগ করলে আমি থানায় ডায়রি করার পরামর্শ দিয়েছি। মামলার তদন্ত চলছে। ঘটনা সঠিক হলে আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসএএস/এএস/অক্টোবর ০৫, ২০২২)