রিপন মারমা, রাঙামাটি : টানা ছুটিতে পর্যটকরা ছুটে আসছেন হ্রদ-পাহাড়ের   হিমেল হাওয়া আমেজ উপভোগ করতে পর্যটন শহর রাঙামাটিতে এখন পর্যটকদের আগমনে মুখরিত। খালি নেই শহরের কোনো হোটেল-মোটেল। শহরের সব পর্যটন স্পট, হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁ এখন পর্যটকদের দখলে। ব্যবসাও বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর। স্থানীয়দের হাতে তৈরি তাঁত ও টেক্সটাইল পণ্যের দোকানেও পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ও সব মিলে সরকারি চার দিনের ছুটি পাওয়ায় এবার পর্যটকের চাপ বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করে পর্যটকের চাপে শহর ও মেঘের রাজ্য সাজেকের হোটেল-মোটেল ও কটেজের কোনও রুম আর খালি নেই। প্রায় শতভাগ বুকিং হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (৫ অক্টোবর) শারদীয় দুর্গাপূজা, শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বুধবার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হয়। শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার একদিন ছুটি নিতে পারলেই পরের আরও তিন দিন ছুটি কাটানো সম্ভব হচ্ছে। এ সুযোগে সব মিলে প্রায় পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে অনেকেই মঙ্গলবার রাত থেকেই রাঙামাটিতে আসতে শুরু করেন। আবার অনেকে বৃহস্পতিবার ছুটি না পাওয়ায়, শুক্রবার আসবেন, এমন বুকিংও রয়েছে প্রচুর হোটেল মোটেল রেস্তোরাঁতে।

সিলেট থেকে রাঙামাটি ঘুরতে এসেছেন মো. ইউনুস আলী তিনি জানান, আমি এর আগেও অনেকবার রাঙামাটি এসেছি, তবে শীতের সময় রাঙামাটি অনেকবার এসেছি তখন দেখতে পেয়েছি শীতের সময়ে একেবারেই আলাদা। এখানকার পাহাড়ে শীতের সকালে মনে হয় মেঘের রাজ্যে ভেসে আছি। বিশাল কাপ্তাই হ্রদ ও পাহাড় দেখে সত্যিই আমি মুগ্ধ হয়েছি তাই সেইজন্য এবারে শীত না আসার আগে বন্ধের দিনে আবার রাঙামাটি আসলাম। এখন মনে হচ্ছে প্রতিবছরই রাঙামাটি আসতে হবে। ঢাকা থেকে আসা এক দম্পতি জানান, পাহাড় ও হ্রদের সৌন্দর্য দেখতে এ প্রথম রাঙামাটি আসা। সত্যিই সব কিছুই সুন্দর লাগছে। যেন প্রকৃতি দুহাতে রাঙামাটিকে সাজিয়েছে। তবে পর্যটন অবকাঠামো আরও উন্নত হলে পর্যটকরা বেশি আকৃষ্ট হতেন।

রাঙামাটির হোটেল স্কয়্যার পার্কের মালিক মো. নেওয়াজ উদ্দিন মুটোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে পর্যটক বেশি থাকে। তবে এবারে ভিন্ন রুপের পরিনত হয়েছে শীত না আসার আগে পর্যটকদের ভীর

তার মধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা ও সব মিলে সরকারি চার দিনের ছুটি পাওয়ায় এবার পর্যটকের চাপ বেড়েছে।

টানা ছুটিতে দীর্ঘদিন পর আবারও প্রত্যাশা অনুযায়ী পর্যটক আসছে। ৩ তারিখ থেকে শতভাগ বুকিং চলছে। আর এই টানা ছুটিতে আরও বেশি বুকিং বেড়েছে। আমাদের ৯ তারিখ পর্যন্ত কোনও রুম খালি নেই। আশা করছি যারা ইতোমধ্যে এসেছেন বা আসবেন সবাইকে ভালো সার্ভিস দিতে পারবো।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ন দেব বর্মন মুটোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেল, সাজেকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার প্রায় আনুমানিক ১২০০ গাড়ি প্রবেশ করেছে। এসব গাড়িতে সব মিলে প্রায় সাত হাজার পর্যটক এসেছেন। প্রথমদিকে সড়কে কিছুটা সমস্যা থাকলেও এখন সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান তিনি।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, সেখানকার ১১২টির মতো রিসোর্ট-কটেজের সব কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে। সাজেকে এসব রিসোর্ট-কটেজে দৈনিক সাড়ে তিন হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন বাড়ি ও তাবুতে বেশ কিছু পর্যটক রাত্রি যাপন করেন।

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, টানা সরকারি ছুটিতে আমাদের প্রায় ৯০ ভাগ বুকিং হয়েছে। আশা করছি শুক্রবারে মধ্যে শতভাগ হবে। কারণ পরের আরও তিন দিন ছুটি রয়েছে। এ ছুটিকে কাজে লাগিয়ে পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদেরকে নিয়ে অনেকেই আসছেন রাঙামাটিতে

(আরএম/এএস/অক্টোবর ০৭, ২০২২)