নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের ১নং রাণীনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের প্রবল সংকট দেখা দিয়েছে। কক্ষে শিক্ষার্থীদের যেন বসার ঠাঁই নেই। একই শ্রেণীকক্ষে ১০২জন শিক্ষার্থী গাদাগাদি করে পাঠ গ্রহণ করছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের পরিচ্ছন্ন ও মনোরম পরিবেশে পাঠ গ্রহণ কার্যক্রম ।  ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।    

জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়টিতে প্রতিদিন মোট ৫৪৪জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। বিদ্যালয়টিতে কক্ষের সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টির উত্তর দিকে অবস্থিত দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত ভবনের দরজা, জানালা ও ওপরের ছাউনির টিন নষ্ট হয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নষ্ট পরিবেশের তিনটি কক্ষে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন পর অরক্ষিত বিদ্যালয়টিকে প্রাচীর দিয়ে সুরক্ষিত করলেও ভিতরে পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অরক্ষিত অবস্থায় পাঠ গ্রহণ করতে বাধ্য হতে হচ্ছে আগামীর ভবিষ্যত এই কোমলমতি শিশুদের। একই শ্রেণীতে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে একই সঙ্গে পাঠদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের। বিদ্যালয়টিতে মাত্র দুইটি টয়লেট। যার একটি শিক্ষকদের আর অপরটি শিক্ষার্থীদের । এতে বাধ্য হয়ে টয়লেটের অভাবে শিক্ষার্থীদের প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করতে হয় বিদ্যালয়টির আনাচে-কানাছে, আর নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়টির সুস্থ্য পরিবেশ। বিদ্যালয়টির এহেন অবস্থায় অনেক সচেতন পরিবার তাদের সন্তানকে ঐতিহ্যবাহী এই মডেল বিদ্যালয়ে ভর্তি না করে বেশি অর্থ ব্যয় করে ভর্তি করছে স্থানীয় প্রাইভেট (কেজি) বিদ্যালয়গুলোতে।

সূত্র জানায়, উপজেলার এই স্বনামধন্য মডেল বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয় ১৯৩৭ সালে সে সময়ের স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহায়তায় মাটির কটি কক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করে । এখনও প্রতি বছর সমাপনি পরীক্ষায় ও বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে শত ভাগের গৌরব ধরে রেখেছে ঐতিহ্যবাহী এই মডেল বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টির এই পরিত্যক্ত ভবনটি ভেঙ্গে নতুন করে ভবন তৈরি করা হলে বিদ্যালয়টির কক্ষ সমস্যার সমাধান হবে বলে অভিভাবক মহলের দাবি।

এই বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক অমল কৃষ্ণ সরকার জানান, বিদ্যালয়টি শ্রেণী কক্ষের অভাবে দীর্ঘদিনের পুরনো ঐতিহ্য আজ হারাতে বসেছে। আমি ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ একাধিকবার ওপর মহলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি তবুও কোন লাভ হয়নি। ওপর মহল চাইলেই এই সমস্যা অনেক পূর্বেই সমাধান হয়ে যেত বলে জানান তিনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, বিদ্যালয়টির এই পরিত্যক্ত ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন ও টয়লেট তৈরি করার জন্য জেলা অফিস বরাবর ইতোমধ্যেই লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে।

(বিএম/এএস/অক্টোবর ১৪, ২০১৪)