আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও : কেন্দ্রীয় মৎস্য লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর লস্করকে নিয়ে তার এলাকার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা কথা বলেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীসংকৈল এলাকায় গত শুক্রবার এক মতবিনিময় সভায় তার বাবা ও পরিবারের মুক্তিযুদ্ধের অবদান নিয়ে কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধারা।

এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা বলেন যুদ্ধ শুরুর প্রথমে শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলী এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। তিনি ব্রিটিশ আর্মিতে থাকার সুবাদের যুদ্ধের কৌশল ভাল জানতেন। সেই কৌশল কাজে লাগাতে স্বাধিনতার যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেন।

প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও স্থানীয় ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান আব্বাস আলী বলেন, শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলী এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। তিনি দেশ স্বাধীনের আগে থেকেই বাংলাদেশের পক্ষে স্বাধীনতা চেয়েছেন। এ ছাড়াও এই এলাকায় কয়েক শতাব্দী থেকে উনার পুর্বপুরুষের বসবাস করে আসছেন। তিনি বাংলা ভাষা ভাষির বাংগালী।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজলুল হক বলেন, আমি ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে আংশ নেই এবং দেশ স্বাধীন করে যখন বাড়িতে ফিরে আসি। পরবর্তীতে খবর পেলাম শেখ আজগর লস্কর এর বাবা মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়ায় উনাকে পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে। সেই থেকে আমরা জানি লস্কর একজন শহীদ পরিবারের সন্তান।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোবারক আলী বলেন, শেখ আজগর লস্কর এর বাবা ইদ্রিস আলীকে বিহারিরা হত্যা করে। এর অন্যতম কারন হলো তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছিলেন। ইদ্রিস আলী নিজেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। উনার বাবাকে যখন পাকিস্থান আর্মিরা গুলি করে মারে তখন অনেকেই ভায়ে পালিয়েছিল। আমি দেখতে এসেছিলাম কিন্তু ভয়ে কাছে যেতে পারি নাই। উনার লাশ বাড়ির পাশে পরে ছিল।

সেনা মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিন বলেন, ইদ্রিস আলী ছিলেন একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক। তিনি যুদ্ধ শুরুর আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দেওয়া শুরু করেন। এ জন্য এলাকার কিছু বিহারি ও রাজাকার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ছিলে। সেই জায়গা থেকেই যুদ্ধ চলাকালীন শেখ আজগর লস্কর এর বাবাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এখন উনার কবরের পাশেই আমার বাড়ি।

এ সময় কেন্দ্রীয় মৎস্য লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর লস্কর সহ এলাকার প্রবীণ আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

(এআই/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০২২)