রাজন্য রুহানি, জামালপুুর : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ঝিনাই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কয়েক একর ফসলি জমি। নদীর আশেপাশে আরও কয়েক একর ফসলি জমি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রায় দুইমাসেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের ধারাবর্ষা ও খাস কোম্পানি এলাকার মাঝামাঝি ভাটারা ইউনিয়নের পারপাড়া ঝিনাই নদীতে সরেজমিনে দিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। প্রতিকার না পেয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধারাবর্ষা বাজার থেকে উত্তরদিকে ধারাবর্ষা ও খাস কোম্পানির মাঝামাঝি ভাটারা মৌজার পারপাড়া ঝিনাই নদীতে ড্রেজার মেশিনে প্রায় দুইমাস ধরে প্রকাশ্যে বালু বিক্রি চলছে। প্রতিদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এ ড্রেজিং। এতে একরের পর একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মিলেনি।

স্থানীয় কৃষক আলাল, ফারুক, আজগর, বাবলু, রফিকুলসহ অভিযোগকারীরা জানান, ধারাবর্ষা গ্রামের আজিজুল আকন্দের ছেলে ছানু মিয়া ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন এবং পারপাড়া গ্রামের আফসার মন্ডলের ছেলে করিম মেম্বার সেসব বিক্রি করে যোগসাজশে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

পাশের সৈয়দপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লালু মিয়া জানান, ড্রেজার মেশিনের পাশেই তাদের ছয়ভাই মিলে দেড় একর জমি রয়েছে। জমিগুলোতে বর্তমানে আলুসহ মওসুমি ফসল আবাদ করা হয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলনের ফলে অধিকাংশ জমি নদীগর্ভে, বাকি জমিও হারানোর পথে।

কান্দারপাড়া গ্রামের কৃষক মজনু মিয়া জানান, বালু উত্তোলনের ফলে তার ৭৮ শতক জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নদীখেকোরা অবৈধ বালু উত্তোলন করায় লিখিত অভিযোগের দুইমাস পার হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা বলেন, বিষয়টি শুনে আমি ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, মেশিন বন্ধ আছে।

জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখবো।

(আরআর/এএস/নভেম্বর ০৭, ২০২২)