বিশ্বজিৎ সিংহ রায়, মহম্মদপুর : মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়ন কে সামনে রেখে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের সর্বক্ষেত্রে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে মাগুরার মহম্মদপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। গ্রামীণ কাচা সড়ক পাকাকরণ, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্থ ও শক্তিশালীকরণ, গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ, কালভার্ট নির্মান, প্রথমিক বিদ্যালয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মান, ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, বিভিন্ন বাজারের অবকাঠামো নির্মাণ, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ, বিভিন্ন স্কুলের উন্নয়ন, পাবলিক টয়লেট স্থাপন সহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে একসময়ে দেশের পশ্চাৎপদ উপজেলা হিসাবে পরিচিত মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার চেহারাই পাল্টে যেতে শুরু করেছে। গত বছরের ১৬ নভেম্বর উপজেলা প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপজেলা প্রকৌশলী জনাব মোঃ সাদ্দাম হোসাইন।

মহম্মদপুর এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, গত একবছরে প্রায় ২৫ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরনের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৩৫ কিলোমিটার কাচা রাস্তা পাকাকরনের কাজ শুরু হয়ে শেষ পর্যায়ে। এর বাইরে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্থকরণ ও শাক্তিশালীকরনের কাজ চলমান। এছাড়া প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ খুব শিঘ্রই শুরু হবে বলে জানা যায়। সড়ক অবকাঠামোর পূর্ণতা দিতে সড়কের পাশাপাশি নিকোরহাটা ব্রিজসহ ৫ টি ব্রিজের নির্মান ও সংস্কার কাজ চলমান এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক কালভার্ট ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে। সীমানা জটিলতা ও গাছ সমস্যার কারনে বহুদিন ধরে আটকে থাকা প্রায় ১১৪টি স্কুলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আবু আব্দুল্লাহেল কাফি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রামানন্দ পালের সহযোগিতার অত্যন্ত দক্ষতার সাথে শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন বর্তমান উপজেলা প্রকৌশলী।

গত একবছরে ১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মান সম্পন্ন হয়েছে এবং আরো ১২ বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ ইতেমধ্যেই শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কারনে আটকে থাকা আরো ১০ টি বিদ্যালয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত বাবুখালী ভূমি অফিসের কাজ সফলভাবে শেষ হয়েছে। এছাড়া, আইপিসিপি প্রকল্পের অধীনে এ উপজেলায় ঘাটলা নির্মানসহ ৮ টি পুকুর খনন সম্পন্ন হয়েছে এবং চারটির কাজ চলমান। এলজিইডির এসকল কাজের সুফল পেতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। রাস্তাঘাটে ভোগান্তি যেমন কমেছে, আর্থসামাজিক অবস্থারও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এলজিইডি নির্মিত শেখ হাসিনা সেতু কেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে বিনোদনকেন্দ্র।

আমূল পরিবর্তন হয়েছে মহম্মদপুর ও বোয়ালমারি উপজেলার আন্তযোগাযোগে। আশার কথা চলমান অর্থবছরের অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই স্বল্প খরচে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। অসমাপ্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এ অর্থবছরেই শেষ হবে। উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরীণ সড়ক উন্নয়ন, সদর ইউনিয়নে প্রায় ১.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ, চারটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, বহুল আলোচিত গোরস্থানের ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ এর রাস্তা, বিনোদপুর শ্মশান এর উন্নয়ন, প্রায় ১৬ টি মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়ন, ২টি নতুন ভূমি অফিসের নির্মাণ, আইসিটি অধিদপ্তরের জয় ডিজিটাল সেন্টার নির্মাণ, WeCare প্রকল্পের মাধ্যমে বিনোদনপুর মার্কেট ও এর সাথে সংযুক্ত সড়কের ব্যাপক উন্নয়নসহ প্রায় ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

উন্নয়ন অভিযাত্রায় নিরবে কাজ করে চলা উপজেলা প্রকৌশলী জনাব মোঃ সাদ্দাম হোসাইন জানান, ‘মহম্মদপুর উপজেলার উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে গত একবছরে আমি এখানকার মানুষের প্রত্যাশাটা বোঝার চেষ্টা করেছি।বর্তমান সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অংশ হিসেবে গ্রামীন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে নেবার চেষ্টা অব্যাহত আছে। আশা করি দ্রুতই আমার গ্রাম আমার শহরের যে স্বপ্ন দেশের মানুষের মনে জাগ্রত তা বাস্তবায়িত হবে।এলজিইডির উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণ উপকৃত হলেই আমাদের শ্রম সার্থক। দেশের এ স্বপ্নযাত্রায় অবদান রাখতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’

(বিএস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০২২)