ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : দালাল ছাড়া ভেতরে প্রবেশ করা যায় না ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে। পুলিশ ভেরিফিকেশন, জন্মনিবন্ধন সনদ আর সত্যায়িত করার সিল সবই আছে দালালের কাছে। দরকার শুধু টাকা। নিজে না গিয়েও পকেটভর্তি টাকা দিলেই হলো, আপনার পাসপোর্ট প্রস্তুত। কিন্তু নিয়মানুসারে আবেদন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পাওয়া যায় না পাসপোর্ট।

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের প্রতিদিনকার চিত্র এটি। আনসার -দালাল-কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনিয়ম চলে আসছে দিনের পর দিন।ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসটির সামনে প্রায় সব সময়ই শ’খানেক মানুষের জটলা লেগে থাকে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ বেশি আসায় পাসর্পোট অফিসে দালালদের ব্যবসাও তাই রমরমা! আশেপাশের বাসিন্দারাও এতোদিনে জেনে গেছেন এখানকার কাজ আর দালালদের দৌরাত্ম্যের কথা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নিয়ম মেনে এলে পাসপোর্ট করা যায় না। দালালের হাতে টাকা তুলে দিলেই পাসপোর্ট পৌঁছে যায় ঘরে।

শৈলকূপার ফুলহরি গ্রাম থেকে পাসপোর্ট করতে আসা শ্রীবাস অধিকারী বলেন, পাসপোর্ট অফিসে টাকা দিতেই হয়, না দিলে হয়রানির শেষ নেই।

কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার এলাকার ইয়াকুব আলী পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন স্বাভাবিক নিয়মে। দুই মাসে পাসপোর্টের খোঁজে অফিসে ঘুরেছেন তিনবার। পাসর্পোট তো দূরের কথা, তিন মাসে তার পুলিশ ভেরিফিকেশনই হয়নি। ইয়াকুবের সঙ্গে পাসর্পোট করতে অফিসে এসেছিলেন আরও তিনজন। বাকিরা এক আনসার সদস্যর মাধ্যমে সাত হাজার টাকা দিয়েছিলেন এ জন্য। এক মাসের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পান এ তিনজন।

পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়, পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন ধরনের মামলায় পলাতক আসামিসহ অনেকেই। আর নগদ টাকার বিনিময়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই নগদে পেয়ে যাচ্ছেন পাসপোর্ট।
আনসার সদস্যদের দেওয়া টাকার এক বড় অংশই যায় অফিসের কর্মকর্তাদের পকেটে।

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো: সাকাওয়াত হোসেন বলেন, অভিযোগগুলো সঠিক নয়। আমরা যথাযথ নিয়মে গ্রাহকদের সেবা দিয়ে থাকি।

(একে/এএস/নভেম্বর ২৪, ২০২২)