ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে ভুল চিকিৎসায় ইসরাত জাহান মাহেরা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ক্লিনিক মালিক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করেছে। ক্লিনিকটির নার্স সহ স্টাফরা গা ঢাকা দিয়েছে।

শুক্রবার রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার এলাকায় ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। শিশু মাহেরা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার মেয়ে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে পেটে ব্যথা নিয়ে ইসরাত জাহান মাহেরা নামে ছয় বছরের এক শিশু ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পরে চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক শিশুটির শরীরে পরপর তিনটি ইঞ্জেকশন পুশ করে নার্সরা। ফলে সন্ধ্যা নাগাদ শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটির মুমূর্ষ অবস্থা দেখে মা শামীমা আক্তার ডিউটিরত কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের শরণাপন্ন হলে তিনি ঝিনাইদহে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এদিকে অপচিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা ক্লিনিকে ঢুকে ডাক্তারের চেম্বার, অপারেশন থিয়েটার ও প্যাথলজিক্যাল কক্ষসহ আসবাবপত্র তছনছ করে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ক্লিনিক মালিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্সী ও কথিত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে অপচিকিৎসার কারণে ইতিপূর্বে ওই ক্লিনিকটি একাধিকবার ‌ সিলগালা করে দেয় প্রশাসন। ক্লিনিকে সবসময় কোন চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্স ছাড়াই চলে আসছে বলে অভিযোগ।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন সু্ভ্রা রানী দেবনাথ জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্লিনিক মালিক ও কথিত এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(একে/এএস/নভেম্বর ২৬, ২০২২)