দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে দুই দফা তদন্তের পরে  খাদ্য গুদাম সিলগালা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ২৩ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে খাদ্যগুদামটি সিলগালা করেন তদন্ত কমিটি।

সম্প্রতি পূর্বের ভিজিডি বর্তমানে ভি ডব্লিউ বি (দুস্থ মহিলা সহায়তা কর্মসূচী) এর সুবিধা ভোগীদের চাউল প্রদানকে কেন্দ্র করে চরভদ্রাসন খাদ্য গুদামে চাউল খাটতির বিষয়টি আলোচনায় আসে। অভিযোগের তীর যায় চরভদ্রাসন এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেনের দিকে। সানোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে গুদামের চাউল লোপাটের। সেই সূত্র ধরে ১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার তদন্তে আসেন মাদারীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইসমাইল হোসেন(ভারপ্রাপ্ত) দিন চাউল খাটতির সত্যতা পেয়ে বিস্তারিত জানতে চালিয়ে যান তদন্ত কার্যক্রম। এর পর ২৩ নভেম্বর বুধবার পূণরায় শুরু হয় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তদন্ত। তদন্তের এক পযার্য়ে গা ঢাকা দেন সানোয়ার হোসেন। পরে সন্ধা সাতটার দিকে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রেখে গুদামটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেন ওই কমিটি, চলমান থাকে তদন্ত প্রক্রিয়া।

২০০২ সাল হতে গাজীরটেক ইউনিয়নের মো. খলিলুর রহমান ডিও ক্রয় সহ ধান,চাউল সরবরাহের কাজ করে আসছেন। তিনি দাবী করেন বিভিন্ন সময়ে তিনি সানোয়ারকে নগদ আটচল্লিশ লক্ষ টাকা,সোনালী ব্যাংক চরভদ্রাসন শাখা হতে সাভার উত্তরা ব্যাংকের একটি শাখায় আরিফুন নাহার নামের একটি একাউন্টে উনিশ লক্ষ বিশ হাজার টাকা ও রাজবাড়ীর ইইসিবি ব্যাংকে তামান্না তাবাসসুম নামের একটি একাউন্টে ছয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা মোট তিহাত্তর লক্ষ সত্তর হাজার টাকা প্রদান করেন। এছাড়া চর হাজিগঞ্জ রুপালী ব্যাংক হতে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা প্রদান করেন।

তাকে কেন এত টাকা দেওয়া হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন তিনি কিছু ব্যাবসায়ীক সুবিধা পেতেন। তাই সানোয়ারের সাথে সমন্ময় করে চলতে হতো।

উপজেলার চারটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছ হতে জানা যায় চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নে ভি ডব্লিউ বি উপকারভোগী ৬ শত ৭০ জনের চলমান নভেম্বর সহ চার মাসে আশি মে.টন, হরিরামপুর ইউনিয়নের ৫ শত ৭৯ জনের তিন মাসে বায়ান্ন মে.টন, গাজীরটেক ইউনিয়নের ৬ শত ৫৭ জনের ষাট মে.টন এবং চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের ২ শত ৫৩ জনের বাইশ মে. টন মোট ২ শত চৌদ্দ মে. বিতরন করা হয়নি।
উপরোক্ত চাউল ছাড়া গুদামের ৭০ মে. টন চাউল, ১২০ মে.টন ধান ঘাটতি রয়েছে বলে বিস্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
চরভদ্রাসন এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সানোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

উপরোক্ত বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান ইসমাইল হোসেন বলেন আগামী সাতাশ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানানো যাচ্ছে না। তবে চেয়ারম্যানদের অভিযোগ,চাউল ও ধান ঘাটতির সত্যতা রয়েছে বলে জানান। এছাড়া খলিলের অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তিনি বলেন খলিল লিখিত কোন স্বীকারোক্তি বা ব্যাংক স্টেটম্যান্ট জমা দেয়নি। তবে অর্থ লেনদেনের কথা খলিল মৌখিক ভাবে জানান। ব্যাংককে চিঠি দিয়ে লেনদেনের বিষয়টি প্রমান করা হবে।

(ডিসি/এএস/নভেম্বর ২৬, ২০২২)