স্টাফ রিপোর্টার : দূষণমুক্ত পরিবেশ, নদী ও বায়ু জনগণের প্রচেষ্টা এবং সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘পরিবেশ নিয়ে সচেতন ও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে এমন সংগঠনের কারণেই আজকে পরিবেশ আন্দোলন বৈঠকখানার আলোচনা থেকে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে।’

শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে দূষণমুক্ত নদীর দাবিতে ‘বালু নদী উৎসব’-এ বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম এবং বারোগ্রাম বালু নদী মোর্চা যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বালু নদীর তীরের ইটাখোলা, ত্রিমোহনী, খিলগাঁও এলাকায় দুই দিনব্যাপী এ উৎসব হয়।

উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ূন কবীরও। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব হলো দূষণ ও দখলের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে নদী দূষণ ও দখল বন্ধের জন্য একত্রে কাজ করতে হবে। বর্তমান সরকারের গৃহীত যেকোনো প্রকল্প যেন নদী, খাল, বিল বা পরিবেশের ক্ষতি না করে, সেদিকে খেয়াল রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা।

উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন খুশি কবির। তিনি বলেন, নদীর নিজস্ব গতি আছে। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে নদী দখল ও দূষণ করে এর প্রবাহে বাধা দিলে পরিবেশের ক্ষতি হয়। পরিবেশ রক্ষা করে জনগণের সুবিধার্থে নীতি প্রণয়ন করা উচিত।

সামাজিক আন্দোলনেই দূষণমুক্ত হবে নদী-বায়ু-পরিবেশ

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তৃতা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। তিনি বলেন, বালু নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদী দখল ও দূষণের কারণে দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নদী হয়ে পড়েছে জনবসতির পেছনের অংশ। নদী যেন আবার জনবসতির সম্মুখভাগে আসে, সেজন্যই আমাদের এ আয়োজন।

শুভেচ্ছা বক্তৃতায় বারোগ্রাম বালু নদী মোর্চার আহ্বায়ক মো. সুরুজ মিয়া বলেন, ঢাকা শহরের বর্জ্যের কারণে বালু, দেবধোলাই, নড়াই নদী ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা এ নদী দূষণ প্রতিরোধ করে দূষণমুক্ত নদী গড়া ও নদী সম্পদ রক্ষার প্রত্যয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে লাঠিখেলা ও বালিশ নিক্ষেপ খেলার আয়োজন করা হয়। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুদিনব্যাপী উৎসব শেষ হয়।

উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শহীদ উদ্দীন। সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৭৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আকবর হোসেন, ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিসুর রহমান, ৭৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আজিজুল হক।

অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন কাউন্টার পার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি মাইনুদ্দিন আহমেদ। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মাদ এজাজ বালু নদীর ইতিহাস ও সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার আয়োজকদের পক্ষে ধন্যবাদ জানান।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৬, ২০২২)