স্টাফ রিপোর্টার : প্রতিহিংসার পথ বাদ দিয়ে আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সংকট সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, লাঠি কিংবা পাথরে নয়, সংবিধান, অন্যান্য আইন ও নির্বাচন কমিশনকে মেনে নিয়ে সংস্কার আন্দোলন করতে হবে। আলোচনা হতে হবে সংলাপের মাধ্যমে, সংলাপ অবভিয়াসলি লাঠি, পাথরে হবে না। কথাবার্তার মাধ্যমে হবে। লাঠি, পাথরে গেলে তো সংলাপের প্রয়োজন নেই।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের শত বছরে আয়কর আইন: প্রত্যাশা এবং অর্জন শীর্ষক’ আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সভায় বক্তারা শতবর্ষী কর আইনের বিভিন্ন সংকট, সমাধান নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তবে পরিকল্পনামন্ত্রী মনে করেন, কর খাতে সংস্কারের প্রয়োজন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের বিকল্প নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। বড় সংস্কার আমরা করেছি স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে। নিজেদের জমি নিজের হাতে এনেছি। এখন অন্যান্য বিষয়ে সংস্কারের আবহ চলতে থাকবে, সেটা (নিয়ে) এই মুহূর্তে আমাদের কাজ চলছে। ডায়ালগ, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার করতে হবে।

আগামী নির্বাচন ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে আরও বড় একটা সংস্কার নিয়ে দেশে... (আলোচনা) চলছে। ওখানেও তো ডায়ালগের মধ্যে (সমাধান) হওয়া উচিত। কর আইন সংস্কার করতে হলে যে আইনগুলো আছে সেগুলো হাতে নিয়ে ডায়ালগ কন্টিনিউ করতে হবে এবং কর আইন পরিবর্তন করতে হবে। এটাকে যদি ঢেলে ওখানে নিয়ে যাই, বড় জায়গায় যেখানে হট্টগোল চলছে, সেখানে আরেক ধরনের পরিবর্তন করতে হলে যে আইন আছে, সংবিধান, অন্যান্য আইন ও নির্বাচন কমিশন আছে, সেটাকে মেনে নিয়ে সংস্কার আন্দোলন করতে হবে।

রাজস্ব বিভাগ ও জনগণের মাঝে একটা দেওয়াল আছে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, এসব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জরুরি, এটা প্রতিনিয়ত করতে হবে। সবখানেই আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা হতে হবে সংলাপের মাধ্যমে, সংলাপ অবভিয়াসলি লাঠি, পাথরে হবে না। কথাবার্তার মাধ্যমে হবে। লাঠি, পাথরে গেলে তো সংলাপের প্রয়োজন নেই।

রাজস্ব খাতে দক্ষ লোক প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, এখানেও সংস্কার প্রয়োজন। জিওগ্রাফি পড়ে এসেছে, হিস্ট্রি পড়ে এসেছে, এখন ট্যাক্স সম্বন্ধে কথাবার্তা বলে। ট্রু, এখানে সমস্যা আছে। ঘা খেয়ে খেয়ে, হোঁচট খেয়ে শিখতে হয়ে। হোঁচট খেয়ে শুধু তার পা ভাঙে না, আরও অনেক লোকের পা ভাঙে। ওর নিজের পা ভাঙলে তো সমস্যা ছিল না, ওর ওখানে যারা যায়, প্রত্যেকের পা ভাঙে। এখানে প্রচুর সংস্কারের প্রয়োজন আছে। আমার ধারণা সরকারপ্রধান এগুলোকে ভাঙতে চান, চেঞ্চ করতে চান। কিন্তু এট দ্য সেম টাইম লিমিটেড বাই ভেরি প্র্যাকটিক্যাল কিছু স্টাবলিশ স্টেকহোল্ডার বা কায়েমে স্বার্থ যেটাকে বলা হয়, যারা আছেন তারা তাকে পদে পদে বাধা দেন। এগুলো ডিঙিয়ে কাজটা তাকে চালিয়ে যেতে হবে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে এফসিএ স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, আয়কর সংগ্রহ গত ১০ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা থেকে ৩ লাখ কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কর আদায় শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অন্যদিকে সারাদেশে উন্নয়নে ছোঁয়া লাগছে, কিন্তু উপজেলা অঞ্চল থেকে কর সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কর অফিস করার আহ্বান জানান তিনি।

এসময় প্রতিযোগিতা কমিশনের বেসরকারি উপদেষ্টা এম এস সিদ্দীকি, রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, আইবিএফবি প্রেসিডেন্ট হুমায়ুর রশীদ ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ২৭, ২০২২)