নিউজ ডেস্ক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হকের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৩০ নভেম্বর। একজন আনিসুল হকের নাম মিশে আছে এই ঢাকার সঙ্গে। তার নাম ছুঁয়ে আছে এই নগরের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। তার এ শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

তিনি শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের মানুষের প্রিয়মুখ ছিলেন। আরও ছিলেন সফল উদ্যোক্তা এবং দর্শকপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক।
প্রয়াত মেয়রের মৃত্যুর দিনে নগরীর বিভিন্ন এতিমখানায় চার হাজার এতিমের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি আনিসুল হকের গ্রামের বাড়িতেও কয়েকটি এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হবে। সেখানকার মসজিদেও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

তার মৃত্যুদিনে বাদ জোহর রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল সাড়ে ৩টায় বনানী কবরস্থানে তার কবরে শ্রদ্ধা জানাবেন তার স্বজন বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা। সেখানে বিদেহী আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করা হবে।
১৯৫২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর কবিরহাটে জন্ম নেন আনিসুল হক।

২০১৭ সালের ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে লন্ডনে যান আনিসুল হক। সেখানে তিনি সেরিব্রাল ভাসকুলাইটিসে (মস্তিষ্কের রক্তনালির প্রদাহ) আক্রান্ত হন। ১৩ আগস্ট তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

আনিসুল হক ২০১৫ সালে ডিএনসিসির মেয়র নির্বাচিত হন। রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তোলার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত হন তিনি।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনালের সামনের সড়ক দখলমুক্ত করতে গিয়ে চালকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। পরে তার নেতৃত্বে ডিএনসিসি ওই সড়ক দখলমুক্ত করে। এ ঘটনায় তিনি রাতারাতি দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পান।

এছাড়া মেয়র নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যেই তিনি ঢাকা শহর থেকে সব বিলবোর্ড উচ্ছেদ করেন, যা সাধারণ নগরবাসীর কাছে ছিল অবিশ্বাস্য। বিভিন্ন এলাকার দখল করা পার্কগুলো আনিসুল হক একের পর এক উদ্ধার করেন। শহরের পথচারীদের জন্য আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করেন। এজন্য মানুষের আস্থার জায়গা তৈরি হয় আনিসুল হককে ঘিরে।

গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতন এলাকায় বিশেষ রঙের রিকশা এবং ঢাকা চাকা নামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসসেবা চালু করেন আনিসুল হক। বিমানবন্দর সড়কে যানজট কমাতে মহাখালী থেকে গাজীপুর পর্যন্ত সঙকে ইউলুপ করার উদ্যোগ নেন তিনি।

এছাড়াও ঢাকার খালগুলো উদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন আনিসুল হক। তার নির্দেশে বনানীর ২৭ নম্বরে যুদ্ধাপরাধী মোনায়েম খানের বাড়ি ‘বাগ এ মোনায়েম’-এর অবৈধ দখলে থাকা অংশ উদ্ধার করে সড়ক প্রশস্ত করা হয়। তার সাহসী কর্মকাণ্ডের জন্য আজো নগরবাসীর হৃদয়জুড়ে আছেন তিনি।

(ওএস/এএস/নভেম্বর ৩০, ২০২২)