আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে গোল্ডেল জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী কেয়া আক্তারের। কেয়া বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের হতদরিদ্র বাদাম বিক্রেতা বাদশা সরদারের মেয়ে। 

কেয়া জানায়, গত ১৪ বছর পূর্বে কেয়ার কেয়ার বাবা বাদাম বিক্রেতা বাদশা সরদার তাকে এক বছর বয়সী রেখে মারা যায়। তার পরে এলাকাবাসী ও আত্বীয়-স্বজনের কাছে হাতপেতে সংসার চালায় তার মা রাশিদা বেগম। কেয়া দারিদ্রাকে পিছনে ফেলে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

আভাব অনাটন ও টানাটানির সংসারে থেকেও কেয়া দৈনিক ৮ থেকে ১০ঘন্টা পড়াশুনা করে মা’কেও সাংসারিক কাজে সহযোগীতা করত। অদম্য মেধাবী ছাত্রী কেয়া তার এই সাফল্যের পিছনে সবচেয়ে বেশী অবদান রয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বলেও জানায়। শিক্ষকদের সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণায় অনুপ্রানিত হয়ে অতিদরিদ্র পরিবারের মেয়ে কেয়া বহুকষ্টে এই কৃর্তিত্ব অর্জন করলেও ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে দেশের দরিদ্র মানুষের সেবা করতে চান।

কেয়ার মা রাশিদা বেগম জানান, নিত্য অভাব অনটানে টানাটানির সংসারে সাত সন্তানের মধ্যে কেয়া সবার ছোট। পরীক্ষার সময় ভালো একটি জামা-কাপড়ও কিনে দিতে পারেনি তকে। এমনকি ভালো খাবারও জোটাতে পারেনি কেয়ার জন্য। তারপরেও মেয়ের সাফল্যে আমরা গর্ববোধ করছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে কেয়াকে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে মেয়ের লেখাপড়ার জন্য সাহায্য ও সহযোগীতার আহব্বান জানিয়েছেন কেয়ার মা।

সরকারী গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, মৃত বাদশা সরদারের অসহায় পরিবারের সকল সন্তান লেখা পড়ায় মেধাবী হওয়া ওই পরিবারের কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি’সহ কোন টাকা পয়সা নেয়া হত না। কেয়ার মত শিক্ষার্থীরাই আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। তিনিও কেয়ার উজ্জল ভবিষ্যতের জন্য সবার সহযোগীতা কামনা করেছেন।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ০১, ২০২২)