স্টাফ রিপোর্টার : সাভার চামড়া শিল্পনগরীর সিইটিপি সংশোধন না করায় চামড়া খাতের রপ্তানিতে সবচেয়ে বড় বাধা এখন এটি। সিইটিপি এখনো ঠিক করা সম্ভব। তবে নীতি নির্ধারকরা এখন বুঝতে পেরেছেন, এটি ঠিক না করলে রপ্তানি আয়ে ধ্বসে পড়বে।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন এপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর। লেদারটেক বাংলাদেশ-২০২২ উপলক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, পরিবেশ ভালো করার আশায় আমরা সাভারে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে ফল উল্টো। আমাদের শ্রম সমস্যাও বেড়ে গেলো। এর বড় একটি কারণ ঢাকার বাইরে অনেকেই কাজে যেতে চান না। এখানে কর্মসংস্থানের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে, উচ্চ শিক্ষিতরাও আসছেন, আবার অনেকেই আসতে চাচ্ছেন না। অন্য সেক্টরে যেতে চায় শুধু পরিবেশের কারণে।

চামড়া রপ্তানি নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চামড়া খাত। গত বছর এক দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে। তবে দুঃখজনকভাবে সাভারের সিইটিপি ঠিক না করায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি।

‘চামড়া খাতে জুতা বিক্রিতে রপ্তানি আয় বিশ্বে প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলার। আমরাও সে বাজারটা ধরতে পারি। এখানে দক্ষ সম্পূর্ণ ব্যক্তি দিয়ে সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে হবে। চামড়া রপ্তানিতে বড় বাধাও প্রযুক্তি না থাকা। এ কারণে একটি অর্ডার পাওয়ার পরও আমাদের ৯০ থেকে ১০০ দিন সময় পর্যন্ত লেগে যায় সরবরাহ করতে। ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশে এটাই বড় বাধা। অথচ অন্যান্য দেশে মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যেই তারা পণ্য ডেলিভারি করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া খাতের রপ্তানি আয় এক দশমিক ৬৫ বিলিয়ন থেকে ১০-১২ বিলিয়নে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। সরকার আগামী ৯ বছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে তার রপ্তানি আয়ের দশগুণ বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর পরে পরিবর্তিত ব্যবসায়িক ল্যান্ডস্কেপে- ২০২০ সালে চামড়াজাত পণ্যের বিশ্বব্যাপী বাজার অনুমান করা হয়েছিল ২৪০ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২০২৭ সাল নাগাদ ৩১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংশোধিত আকারে পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যা চার দশমিক এক শতাংশে সিএজিআর-এ বৃদ্ধি পাবে। পাদুকা চার দশমিক আট শতাংশ সিএজিআর রেকর্ড করবে। আর ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ মার্কিন ডলার ১১৬ দশমিক এক বিলিয়নে পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা করেছে, যেন ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়া খাতের রপ্তানি আয় এক বিলিয়ন থেকে ১০-১২ বিলিয়নে উন্নীত করার লক্ষ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সরকার আগামী ৯ বছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে তার রপ্তানি আয়ের দশগুণ বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

বুধবার শুরু লেদারটেক মেলা

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেশন সিটি বসুন্ধরায় আগামী বুধবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ‘লেদারটেক বাংলাদেশ ২০২২’র অষ্টম আসর। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি হিসেবে সকালে প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। তিনদিনের এ প্রদর্শনী শেষ হবে ৯ ডিসেম্বর শুক্রবার।

১০টি দেশের প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠানের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং মেশিনারিজ, কম্পোনেন্ট, ক্যামিকেল এবং অ্যাকসেসরিজ অনর্পিত হবে। তিন দিনব্যাপী এ ট্রেড শোতে বাংলাদেশের চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং ফুটওয়্যার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারি, কম্পোনেন্ট, ক্যামিকেল এবং অ্যাকসেসরিয়া সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রযুক্তি তুলে ধরা হবে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২২)