স্টাফ রিপোর্টার : আগামী বছর জলবায়ু আলোচনায় ক্ষয়-ক্ষতি অর্থায়ন কাঠামো (লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফিন্যান্সিং ফ্রেমওয়ার্ক-এলডিএফএফ) তৈরির ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে জোরালো নেতৃত্ব প্রদানে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুপারিশ করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে কপ ২৭ এর ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে নাগরিক সমাজের অভিমত শীর্ষক আলোচনায় সভায় এ কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

অ্যাওসেড, কানসা-বিডি, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিপিডি), কোস্ট ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর পার্টিসেপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড (সিএসআরএল), ইক্যুইডিবিডি এবং লিডারস যৌথভাবে কপ-২৭ ফলাফল এবং বাংলাদেশে করণীয়: ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নের পরবর্তী আলোচনায় বাংলাদেশকে অবশ্যই নেতৃত্বে থাকতে হবে’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি মিশরে অনুষ্ঠিত কপ ২৭ এ অংশগ্রহণকারী অনেকেই বক্তৃতা করেন। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন, সিএসআরএল’র জিয়াউল হক মুক্তা, সিপিআরডি’র মো. শামসুদ্দোহা, এবং কানসা -বিডির রাবেয়া বেগম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইক্যুইটিবিডির আমিনুল হক।

আমিনুল হক উল্লেখ করেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফিন্যান্স ফ্রেমওয়ার্ক (এলডিএফএফ) ঘোষণা কপ-২৭ এর একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। এটি নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পক্ষে আত্মতৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যতক্ষণ না এটিকে একটি দারিদ্র বান্ধব এবং ন্যায্যতাভিত্তিক ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা না যায়।

তিনি সম্মেলনের চূড়ান্ত ঘোষণাপত্রে স্বল্পোন্নত দেশ ও দ্বীপ দেশগুলোর কথা উল্লেখ না করায় ধনী দেশগুলো এবং কপ সভাপতির সমালোচনা করেন। কারণ ক্ষয়ক্ষতি অর্থায়নের বিষয়ে এ দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।

তিনি কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেন যার মধ্যে রয়েছে-কার্যকর এলডিএফএফ প্রতিষ্ঠিত করতে আসন্ন সম্মেলনে ও আলোচনায় স্বল্পোন্নত দেশগুলির অবস্থান নির্ধারণে ও তা আদায়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে, এলডিএফএফ এর কাঠামো প্রণয়নের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ধনী দেশগুলোর ঐতিহাসিকভাবে দায়ের ব্যাপারটি বিবেচনা করতে হবে, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে জাতীয় পরিকল্পনা বা ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন প্রণয়নে ধনী দেশগুলোকে বাংলাদেশের চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হার ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্য অর্জনে অর্থপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমানোর বর্তমান আলোচনা বিজ্ঞান ভিত্তিক দাবির চেয়ে ৪০ বছর পিছিয়ে। ১.৫ ডিগ্রি লক্ষ্য অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া স্বত্ত্বেও বড় দূষণকারীগুলোর এ বিষয়ে তেমন কোনো উদ্যোগই নেই। তথাকথিত ‘ফেজ ডাউন’ ধারণার সুযোগে অনেক ইউরোপীয় দেশ তাদের কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি পুনরায় কার্বন নিঃসরণ শুরু করেছে। এ প্রবণতা অগ্রহণযোগ্য। এ চাপ সৃষ্টি করা বন্ধ করতে হবে।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০২২)