১০ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় জামালপুর
রাজন্য রুহানি, জামালপুর : দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় জামালপুর। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরামহীন আক্রমণে পাকসেনারা পরাস্ত হলে ১১ নং সেক্টরের অধীন জামালপুর শহরের আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা।
স্বাধীনতা যুদ্ধে জামালপুর ছিল পাকিস্তানের ৩১ বেলুচ রেজিমেন্টের সদর দপ্তর। শহরের পিটিআইয়ে ছিল পাকসেনাদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। ৯ ডিসেম্বর দিনে চারদিক থেকে এই ঘাঁটিকে ঘিরে ফেলেন মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর অকুতোভয় সেনারা। তুমুল যুদ্ধ চলে রাতভর। চতুর্মুখী আক্রমণে টিকতে না পেরে ভোরের দিকে হাল ছেড়ে দেয় হানাদার বাহিনী। লেজ গুটিয়ে বরণ করে পরাজয়ের মালা।
হানাদার বাহিনী পরাস্ত হলে ভোরেই মৃত্যুঞ্জয়ী খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সীর (বীর প্রতীক বার) নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষের ‘জয়বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয় জামালপুর জেলা শহর। আকাশে ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা।
এই যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ২৩৫ জন সেনা নিহত হয়। আহত হয় অনেক। আহতরাসহ আত্মসমর্পণ করে ৩৭৬ জন সেনা। আর এই যুদ্ধে শহীদ হন মিত্র বাহিনীর মাত্র ১১ জন সদস্য।
মুক্তির ইতিহাসে বাঙালির বীরত্বে সমুজ্জ্বল এই স্মৃতি হৃদয়ে ধারণ করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে দিবসটি।
(আরআর/এএস/ডিসেম্বর ১০, ২০২২)