তুষার বাবু, নেত্রকোণা : যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্মানে নেত্রকোণায় পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জেলার টাউনহল অডিটোরিয়ামে এই আয়োজনে এক আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সামনেই জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার পরিজনরা জেলায় একটি 'বিজয় স্তম্ভে'র দাবি তুলেছেন। একই সাথে নতুন প্রজন্মের কাছে পাক-হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার-আল বদরদের চিন্হিত করা ও দেশ মাতৃকার সাথে বৈমানির করার জন্য ঘৃণা  প্রকাশের প্রতীকি মাধ্যম হিসেবে একটি 'ঘৃণা স্তম্ভ' নির্মাণ, যেখানে রাজাকার -আলবদরদের নাম সংকলিত করা থাকবে- সেই দাবি তোলেন। 

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা ও ৭৫ এর প্রতিরোধযোদ্ধা জনাব অসিত সরকার সজল, নেত্রকোণা পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান, নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আইয়ুব আলী, বিশেষ অতিথি সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩১৭ হাবিবা রহমান খান শেফালী, নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শামছুর রহমান লিটন সহ জেলার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্যবৃন্দ।

ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসক সদর পৌরসভার কালীবাড়ি রোডস্থ বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কার্যক্রম শুরু করেন। নেত্রকোণা জেলায় অন্তত ১৭টি বধ্যভূমি এখনও অসংরক্ষিত। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই জেলার নাম জানা উল্লেখযোগ্য শহীদদের মধ্যে রয়েছেন শহীদ ড. ফজলুর রহমান খান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মেহের আলী, শহীদ অধ্যাপক আরজ আলী, শহীদ ডা. শংকর সেন, শহীদ দবির উদ্দিন আহমেদ, শহীদ কামিনী চক্রবর্তী, শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ, শহীদ ধীরেন্দ্র দত্ত, শহীদ সুধীর চন্দ্র মজুমদার, শহীদ বদিউজ্জামান মুক্তা, শহীদ সিদ্ধার্থ সেন, শহীদ ডাঃ আবদুস সোবহান, শহীদ ডাঃ খগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শহীদ শাহজাহান, শহীদ আলী হোসেন সহ নাম না জানা অনেকেই। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অন্তত ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩জন বিশিষ্ট সাংবাদিক, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবী সহ নাম না জানা আরও অনেক মেধাবী বাঙালিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

(টিবি/এসপি/ডিসেম্বর ১৪, ২০২২)