স্টাফ রিপোর্টার : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের অবসরের আগে পাঁচমাসে দায়ের ও নিষ্পত্তি করা মামলার সংখ্যাগত বৈসাদৃশ্য থাকা প্রায় পৌনে ছয়শ মামলার নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট। প্রতিবেদন আকারে পুরো নথি আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আইনজীবীরা জানান, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের শেষ পাঁচমাসে ৪০৮টি অভিযোগের অনুসন্ধানে কোনো তথ্য-প্রমাণ মেলেনি। এ কারণে কোনো মামলা দায়ের না করেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন দুদক। এ সংক্রান্ত মোট ৪০৮টি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পুরো নথি আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ তালিকায় আছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের দিলীপ কুমার আগারওয়াল, পিপলস লিজিংয়ের পরিচালক ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদুল ইসলাম, রাউজকের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদা ও হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওঠা মামলা। হাইকোর্টে দাখিল করা দুদকের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

২০২১ সালের ১৬ মার্চ দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ শেষ পাঁচমাসে কতজনকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি (দায়মুক্তি) দিয়েছেন তার তালিকা চান হাইকোর্ট। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আসার পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবেদককে এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

‘দুদকে অনুসন্ধান বাণিজ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই সংবাদে বলা হয়, সাবেক চেয়ারম্যান অবসরের আগে পাঁচমাসে অন্যায়ভাবে অনেককে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। ১০-১০-২০ থেকে ১০-৩-২১ পর্যন্ত এসব মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

সকালে শুনানিতে আইনজীবী আদালতকে জানান, ওই বছর চার হাজার ৪৮১ মামলা অনুসন্ধানের জন্য নেওয়া হয়। অনুসন্ধানের পর ৪১০ মামলার পরিসমাপ্তি করা হয়। কিছু নথিতে ১৫৭ মামলায় চার্জশিট দাখিলের কথা বলা হয়েছে। আবার কোনো নথিতে ১৬৫ মামলার চার্জশিটের কথা বলা হয়েছে। আদালত এসব মামলার নথি ১২ ফেব্রুয়ারি পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে দুদকের আইন শাখার উপ-পরিচালককে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ২২, ২০২৩)