কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন মাজারে আজ সোমবার শেষ হচ্ছে পাঁচদিন ব্যাপী বাউল সম্রাট লালন শাহের  ১২৪ তম তিরোধান দিবস ও গ্রামীণ মেলা।

ইতোমধ্যেই সাধু সঙ্গের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তিরোধান দিবস। এখনও ভক্তি-শ্রদ্ধা শেষে বেদনা-কষ্ট নিয়ে বাউল ফকিররা যার যার গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছেন।


প্রতিদিনই সন্ধ্যা থেকে শুরু লালনের কর্ম ও জীবনাদর্শন নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তারা মরমী সাধক ফকির বাউল সম্রাট লালন শাহের ও জীবনাদর্শনকে তুলে ধরে আলোচনা করছেন।

বক্তারা শুধু আলোচনার মধ্যে নয় বাস্তবে রূপান্তর করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেহের মাঝে অসিম তার মাঝে বসবাস। মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি এমন সব অমিয় বাণী সমাজে-রাষ্ট্রে বাস্তবায়িত হলে দূর হতে পারে হানাহানি আর রক্তপাত। তাই লালনের গান ও আদর্শকে আগামী প্রজন্মের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করেন বক্তারা।


লালন অনুসারী আজমল ফকির জানান, এমন মানুষের মিলন মেলা ভেঙে যাচ্ছে। ভাব তরিকায় গুরুর ভক্তি প্রধান হওয়ায় সব সাধু-গুরুরা আখড়াবাড়িতে এসে সাঁইজীর তিরোধান দিবসে আসনে বসেন। আর আসনগুলোতে ভক্তরা শরীর ভেঙে গুরুর পদস্পর্শে ভক্তি জানায়। এমন সুন্দর পরিবেশ ছেড়ে যেতে বিদায়ের বেলায় বড় কষ্ট লাগে, বড় খারাপ লাগে তাদের। লালনের আদর্শ ও দর্শন নিজের মধ্যে ধারণ করতে না পারলে তিরোধান দিবসে এসে হায় লালন হায় লালন বলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

পাঁচ দিনের এ তিরোধান দিবসের উৎসবে সাঁইজীর চরণধুলি লেগেছে এখানে আসা ভক্ত আর লালন অনুসারীদের। এখন তল্পি-তল্পা নিয়ে যার যার ঘরে ফেরার তাড়া।

পাবনা থেকে আসা নবীন নামের এক ভক্ত জানান, ‘যুগে যুগে যেসব মণীষীরা এসেছেন তাদের প্রত্যেকই চেয়েছেন দুনিয়ায় সুখ-শান্তি সমৃদ্ধ তেমনি লালন শাহ ও তাদের মতো ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সুখি সমৃদ্ধ সুন্দর এক সমাজ গঠন করতে চেয়েছিল। তার এই মর্মবাণীকেই অনেকেই কাজে বুকে ধারণ করে একাকার হয়ে তার দর্শন অনুসারে চলছে।’

লালন সব ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে গেছেন। লালন সব মানুষের জন্য অবতরণের মতো। বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এদেশের সম্পদ বলে অভিহিত করেন তিনি।

(কেকে/এএস/অক্টোবর ২০, ২০১৪)