স্টাফ রিপোর্টার : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ অবকাঠামো খাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ বাংলাদেশের একটি সফল প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এক লাখ ৪৫ হাজার মানুষ আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা অবকাঠামো খাতেও কাজ করছি। এই কাজের মাধ্যমে দেশে অবকাঠামো খাতেও আমরা ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আশা করছি।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ক প্যাকেজ-৩ এর চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ডিএস-৫ এর আওতায় সরাইল ইন্টারসেকশন থেকে বুধন্তী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কাজের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের উব্লিউপি-০৩ প্যাকেজের লট নং ডিএস-০৬ এর নির্মাণকাজ যৌথ উদ্যোগে চীন ও বাংলাদেশের তিনটি কোম্পানি বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি চেসিইটিস ও এসএলজিসি এবং বাংলাদেশের পিডিএল। এতে খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ টাকা।

অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রীকে (সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী) পেয়েছি, দু-একটা মনের কথা বলবো। প্রথম কথা যেটা বলবো ব্যবসাবান্ধব সরকার উত্তর উত্তর সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ধন্যবাদ মন্ত্রীকে, সড়ক খাতে দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। গতকাল আমরা বরিশাল গিয়েছিলাম, সকালে গেলাম বিকেলে ফিরে এলাম। আশা করি সিলেটেও একই অবস্থা তৈরি হবে।

তিনি বলেন, সিলেটের হবিগঞ্জে আমাদের প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। আশা করি রাস্তার ফলে আমরা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে (সিলেটে) চলে যাবো আবার ঢাকায় ফিরে আসবো। বাংলাদেশ সরকার সুন্দরভাবে যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা বেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের অবকাঠামো আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ সামনে আরও এগিয়ে যাবে।

ঢাকা-সিলেট ফোর লেন সড়কে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে এডিবি ঋণ দিচ্ছে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিংকে ধন্যবাদ জানিয়ে আহসান খান চৌধুরী বলেন, এই ফোর লেন বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা পালন করছে এডিবি। শুধু ঢাকা-সিলেট ছয় লেনে নয়, বাংলাদেশের অবকাঠামো নির্মাণে বিরাট ভূমিকা রাখছে এডিবি। আশা করবো সামনে এডিবি দেশের অবকাঠামো খাতে আরও বিনিয়োগ করবে। আশা করবো বাংলাদেশি কোম্পানি হিসেবে পিডিএল প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথভাবে ভালো ভূমিকা রাখবে। ফোর লেনে (নির্মাণে) অংশ নিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে দেশের অবকাঠামো খাত উন্নত হচ্ছে। উত্তর উত্তর দেশ আরও এগিয়ে যাবে। মধ্যম আয়ের ও উচ্চ আয়ের বাংলাদেশ একদিন পরিণত হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল রওশন আরা মান্নান এমপি, দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং, প্রকল্পের পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. মাছুম সারওয়ার।

প্রকল্পের পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজলুল করিম, সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (কুমিল্লা জোন) আবু হেনা মোহাম্মদ তারেক ইকবাল, হিগো-মীর আকতারের পক্ষে লিউ শাওমিই এবং চেসিইটিস–এসএলজিসি-পিডিএল- এর পক্ষে জাং লিয়াং চুক্তিতে সই করেন।

প্যাকেজ-৩ এর লট ৬-এর আওতায় বুধন্তি বাসস্ট্যান্ড থেকে এস এম স্পিনিং মিল পর্যন্ত ১৯ দশমিক ১ ফ্রেক্সিবল পেভমেন্ট কাজ করা হবে। এর চুক্তি মূল্য এক হাজার ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। কাজটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে পিডিএল ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান। এই লটে ১৫৫ মিটারের ২৫টি কালভার্ট, ৩৪৭ দশমিক ৫৩ মিটার দৈর্ঘ্যের সাতটি সেতু, ৩ দশমিক ৮৮৩ কিলোমিটার ড্রেন, এক হাজার ১২০ বর্গমিটারের বাস বে ও সার্ভিস লেনের রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া দুটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে এই প্যাকেজের আওতায়।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩)