রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কৈখালীতে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের আত্মহত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আ: রহিমসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, সাংবাদিক ও শিক্ষককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির প্রতিবাদে প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে প্রেস ব্রিফিং এ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাংবাদিক শেখ আলী মোর্তজা। তিনি বলেন, গত ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকস্মিকভাবে আত্মহত্যা করেন। এঘটনায় আমরা অত্যান্ত ব্যথিত ও শোকাহত।

প্রকৃতপক্ষে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার অসুস্থতাজনিত কারণে এক মাস ছুটিতে থাকা অবস্থায় বিদ্যালয় থেকে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শ্যামনগরের গোপালপুরের ভাড়া বাসায় দুপুর ১টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি আমরা বিদ্যালয়ে পাঠদানরত অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হই। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় হলো ওই আত্মহত্যার ঘটনাকে পুজি করে সাবেক জামায়াত সমর্থিত নেতা জি এম রেজাউল করিম বার বার নির্বাচনে পরাজয় বরণ করে প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে কৈখালী ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ আ: আব্দুর রহিমসহ বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক, দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, একজন সাংবাদিক ও অপর একজন ম্যানেজিং কমিটির মহিলা সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে জেলহাজত খাটিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে।

প্রয়াত প্রধান শিক্ষকের আপন মামাত শ্যালক জি এম রেজাউল করিম অত্র বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১০ দশ বছর যাবৎ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে দুইজন মিলে প্রায় ১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা নিয়োগ বাণিজ্য ও বিদ্যালয়ের ফ্যাসিলিটিস ভবন, ১০ বছরের ছাত্রছাত্রীদের বেতনের টাকা অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেছেন। নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের সাথে একমত পোষন করায় বিগত সভাপতির রোষানলে পড়েন। তিনি বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের ও ম্যানেজিং কমিটিকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করতে থাকেন।

বিগত ২০২২ খ্রি: অত্র বিদ্যালয়ের চারজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে মামলায় ৬নং আসামী মারুফা বেগমের সাথে প্রধান শিক্ষক আর্থিক লেনদেন করেন অডিও রেকর্ড আদালতে উপস্থাপন করেন। কৌশলে ধর্ষনের চেষ্টা করেন। মারুফা বেগম নারী শিশু নির্যাতন আদালতে মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ চার্জশীটও দাখিল করেন।

মামলার ৭নং আসামী বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জাকির হোসেন উক্ত অবৈধ নিয়োগের ব্যাপারে মামলা দায়ের করেন। যে কারণে সাবেক সভাপতি জি এম রেজাউল করিম তার ফুফাতো বোন প্রায়ত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী নূরুন্নাহার পারভীন কে বাদিনী করে প্রধান শিক্ষকের আত্মহত্যা ঘটনাকে পুঁজি করে মিথ্যা মামলায় নিরাপরাধ সভাপতি, শিক্ষকবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ফাঁসিয়ে দেন।

প্রয়াত প্রধান শিক্ষকের আত্মহত্যার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নিরাপরাধ মানুষগুলোকে উক্ত মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান পূর্বক বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তাগণের কাছে বিনীত অনুরোধ জানানো হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কৈখালী সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ সালাউদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো: আ: মুজিদ, সহকারী শিক্ষক মো: আ: মান্নান, ভুক্তভোগী মারুফার স্বামী মোস্তফা মাহমুদ।

(আরকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩)