রুপক মুখার্জি, লোহাগড়া : লোহাগড়ায় সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই গড়ে উঠেছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর কারখানা। পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রে পরীক্ষিত নতুন প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের নীতিমালা থাকলেও সেই নীতিমালাকে বৃদ্ধাংগুলী দেখিয়ে লোহাগড়ার পার-মল্লিকপুর গ্রামের চরেরডাঙ্গায় বেআইনি ভাবে গড়ে উঠেছে কয়লা তৈরীর কারখানা। জনবসতির পাশে গড়ে ওঠা কয়লার কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে, তেমনই জমির ফসল উৎপাদন প্রক্রিয়া হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও, কয়লা কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মানবদেহে ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় শংকিত সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ০৯ নং মল্লিকপুর ইউনিয়নের পার-মল্লিকপুর গ্রামের পশ্চিম-দক্ষিণ অংশে চরেরডাঙ্গায় বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠের মধ্যে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই গঠে উঠেছে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর কারখানা। নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের শালিখা গ্রামের মো: ছালাম শেখের ছেলে লাবলু শেখ বেআইনিভাবে গড়ে তুলেছেন এ কয়লা কারখানা।

কয়লা তৈরীর কারখানার মিস্ত্রী লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের কুচিয়াবাড়ী গ্রামের লাবলু কাজী আলাপ কালে জানিয়েছেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা উৎপাদন করার জন্য ইট-মাটি দিয়ে ছয়টি চুলা তৈরী করা হয়েছে। এসব চুলার মধ্যে বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় পুড়িয়ে তৈরী করা হচ্ছে কয়লা। এসব কয়লা রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য শহরে চড়া দামে বিক্রি করা হয় বলে জানান। তবে এই কয়লা কারখানার অনুমোদন আছে কি না তা তিনি জানেন না।

এ ব্যাপারে কয়লা কারখানার মালিক লাবলু শেখের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কয়লার কারখানা করতে কোন অনুমতি লাগে না। তাছাড়া তিনি হুংকার দিয়ে বলেন, আমি আওয়ামীলীগ করি, আপনাদের যা মনে চায় তাই লেখেন।

পার-মল্লিকপুর গ্রামের চরেরডাঙ্গার জমির মালিক হাই শেখ, মিকাইল শেখ, মিন্টু শেখ, কুদ্দুস ফকির ও বাবু ফকির বলেন, চরেরডাঙ্গা মাঠটি মূলত: ফসলী জমি। অথচ বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠের মধ্যে কয়লা কারখানা স্থাপন করে শুধু পরিবেশ দূষিত হচ্ছে না, বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তারা অবিলম্বে চরেরডাঙ্গা এলাকার কয়লা কারখানা বন্ধে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কথা হয় নড়াইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কামাল মেহেদীর সাথে। তিনি বলেন, লোহাগড়ায় অবৈধ কয়লা কারখানার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আপনারা অভিযোগ করেছেন, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(আরএম/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩)