মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী সুবর্ণচরে সাবেক স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে, এ ঘটনায় চরজব্বর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ঐ নারী।

ঘটনাটি ঘটে সুবর্ণচর উপজেলার ১ নং চরজব্বর ইউনিয়নের উত্তর বাগ্যা গ্রামে।

ভুক্তভোগী রত্না বেগম (৩২) অভিযোগ করে বলেন, ৪ বছর আগে উত্তর বাগ্যা গ্রামের মৃত হোসেন আলী পুত্র নুর নবী (৪০) এর সাথে তার বিবাহ হয়। বিভিন্ন সময় নির্যাতন ও যৌতুকের দাবীতে নুর নবী মারধর করেন, এভাবে দুজনের মধ্যে কলহ সৃস্টি হলে গত ৭ মাস আগে নুর নবী তাকে ডির্পোজ দেন এবং সামাজিক ভাবে দেন মোহরের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে মিমাংশা হয়। মিমাংশার পর নুরনবী নানাভাবে তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছে।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রত্না বেগম তার ভাইয়ের বাড়ী যাওয়ার সময় সকাল নয় টায় উত্তর বাগ্যা সমিতির বাজারে প্রবেশ মুখে পোলের ওপর পৌঁছলে নুর নবী ও তার ছোট ভাই বিটু(৩০) তাকে দেখা মাত্র ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকা ছাড়ার হুমকি ধমকি দেন এতে তিনি প্রতিবাদ করলে নুরনবী, বিটুসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জন তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে তিনি দৌঁড়ে বাজারে এলে বাবুলের ভাঙ্গারি দোকানে এসে পৌঁছালে সেখানেও তাকে মারধর করে, বাঁচার জন্য পাশের মোস্তফার দোকানে গেলে সেখানেও তাকে মারতে থাকে অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতলে ভর্তি করেন।
রত্না বেগম আরো বলেন, তিনি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, অভিযুক্তরা তাকে এলাকা ছেড়ে চলে যাবার জন্য হুমকি দিচ্ছে।

৮ মার্চ সরজমিনে গেলে প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় নুর মোহাম্মদ বলেন, ঘটনার দিন শৌর চিৎকার শুনে আমি দৌঁড়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে পোলের ওপর গিয়ে দেখি একজন মহিলার মাথা থেকে রক্ত যাচ্ছে কা বা কারা মারছে সেটা আমি দেখেনি তবে ঘটনাস্থলে ছিলো নুর নবী এবং বাবুল।

ভাঙ্গারি দোকানদার বাবুল বলেন, ঘটনারদিন আমি এবং নুর নবী দোকানে বসা, রত্না বেগম হঠাৎ করে এসে নুর নবীকে গালাগালি শুরু করে এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া ঝাটি আর হাতাহাতি হয় তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

চা দোকানদার মোস্তফা বলেন, আমার দোকানে কোন মারামারি হয়নি তবে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নুর নবী বলেন, রত্না বেগম আমার স্ত্রী ছিলো তার আচার ব্যবহার খারাপ হওয়ার কারনে আমি তাকে তালাক দেয়, পরে সামাজিক ভাবে সেটি লেনদেনের মাধ্যমে মিমাংশা হয় পরে তিনি বিভিন্ন সময় তাকে পূনরায় বিয়ে করার জন্য হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। বিয়ে না করলে সে আমার নামে মিথ্যা মামলারও হুমকি প্রদান করে। ঘটনারদিন সে আমাকে অকত্য ভাষায় গালমন্দ করলে তার সাথে হাতাহাতি হয় তাকে কেউ মারধর করেনি এসব কিছু তার মিথ্যা এবং সাজানো নাটক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান বলেন, মহিলার সাথে বিয়ে হয়েছে সেটি আমরা বিয়ের অনেকদিন পর জানতে পারি, প্রায় সময় রত্না সামন্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া ঝাটি হওয়ায় নুর নবী রত্নাকে তালাক দেয় পরে আমরা সামাজিক ভাবে সেটি মিমাংশা করে দিয়েছি এখন নতুন করে কি সমস্যা হয়েছে সেটি আমি জানিনা, শুনেছি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে এখন থানা প্রশাসন যা করে করবে আমাদের কিছু করার নেই।

চরজব্বর থানার এস আই ওয়ারেস বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে তদন্ত করি, সেখানে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি, রত্না বেগম নুর নবীকে জামা জুতো কিনে দিয়েছে এমন কিছু পুরোনো কথা বার্তা নিয়ে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তার পরেও আমি দুপক্ষকে বাসার জন্য বলেছি, ঐ নারি দু দিনের সময় চেয়েছে, বাকিটা বসলে সাক্ষি প্রমানে বুঝা যাবে আসল ঘটনা কি।

(আইইউএস/এএস/মার্চ ০৯, ২০২৩)