সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া : ১১ মার্চ শনিবার আওয়ামীলীগের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে ময়মনসিংহে আসছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ওই বিভাগের অন্যান্য দাবির সাথে নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় একটি লোক সংস্কৃতি একাডেমি ঘোষনার দাবি ওঠেছে সর্বত্র। লোকজ সংস্কৃতির চারনভূমি হিসেবে খ্যাত কেন্দুয়া উপজেলা।

এই কেন্দুয়া উপজেলার আইথর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রাহক প্রয়াত চন্দ্র কুমার দে। গড়াডোবা ইউনিয়নের বিদ্যাবল্লভ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন, লোক কবি রওশন ইজদানি, আশুজিয়া ইউপির সিংহেরগাঁও গ্রামে চির নিদ্রায় শায়িত আছেন মরমী বাউল সাধক জালাল উদ্দিন খাঁ, চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন গানেই প্রশ্ন গানেই উত্তর এর বাউল কবি দ্বিন শরৎ, আশুজিয়া ইউনিয়নে চান্দপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন, বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক যতীন সরকার, কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাজীবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন, দেশ বিখ্যাত পালা গায়ক ও লোকশিল্পী আব্দুল কুদ্দুস বয়াতি, জারি গায়ক আব্দুল হেলিম বয়াতি, বলাইশিমুল ইউনিয়ন কুমুড়–রা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন বাউল কবি প্রভাত চন্দ্র সূত্রধর ও রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নে কুতুবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন, কথা সাহিত্যিক ড. হুমায়ুন আহম্মেদ।

এছাড়া আরো বিভিন্ন গ্রামে পালাগায়ক, বাউল, শিল্পী, জারি গায়ক, গাইনের গীত বয়াতি সহ লোক সংস্কৃতির অনেক শিল্পী। কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিত্যিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, কেন্দুয়ায় লোকজ সংস্কৃতি একাডেমি স্থাপন বা ঘোষনা সময়ের দাবি।

তিনি বলেন, দেশ বিদেশের এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি দল এই কেন্দুয়ায় এসে লোকজ সংস্কৃতির অনেক তথ্য ও ইতিহাস সংরক্ষনের জন্য এসে নিয়ে যান। কিন্তু কেন্দুয়ায় এত গুনী জ্ঞানী শিল্পী থাকলেও লোকজ সংস্কৃতির ইতিহাস রত্ন ভান্ডারে পরিনত করতে এখনও লোক সংস্কৃতির কোন একাডেমি গড়ে ওঠেনি। তিনি লোক সংস্কৃতির ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট লোকজ সংস্কৃতি একাডেমি ঘোষনার দাবি জানান।

পালাগায়ক আব্দুল কুদ্দুস বয়াতি বলেন, লোক সংস্কৃতির পালা গান গেয়ে দেশের বাইরে অনেক দেশে গিয়েছি। গান পরিবেশন করেছি। লোক সংস্কৃতি আমাদের প্রতিটি মানুষের মনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নিকট লোক সংস্কৃতি একটি একাডেমি ঘোষনার দাবী জানান।

পালা নাট্যকার রাখাল বিশ্বাস বলেন, কেন্দুয়ায় লোক সংস্কৃতির একটি একাডেমি স্থাপন করা হলে নেত্রকোণা জেলা তথা ময়মনসিংহ বিভাগের লোকজ সংস্কৃতি দিন দিনই সমৃদ্ধ হবে। তিনিও লোক সংস্কৃতি একাডেমি কেন্দুয়া ঘোষনার দাবি জানান।

বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক যতীন সরকার বলেন, ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রাহক চন্দ্র কুমার দে, লোক সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্য দরবারে পৌঁছে দিয়েছেন। কেন্দুয়ায় লোকজ সংস্কৃতির শেকড় অনেক গভীরে। বাংলা একাডেমি থেকে একসাথে ৩ কবির জীবনী একটি গ্রন্থে প্রকাশিত করেছে। এটি আর কোন উপজেলায় দেখানো সম্ভব না। তিনিও কেন্দুয়ায় লোকজ সংস্কৃতি একাডেমির ঘোষনার দাবি জানান।

(এসবি/এসপি/মার্চ ০৯, ২০২৩)