স্টাফ রিপোর্টার : সংবাদমাধ্যম থেকে সৃজনশীল লেখালেখি; সর্বত্র ভিন্নমতের বক্তব্য ও লেখার প্রতি নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অনলাইন ও অফলাইনে লেখার স্বাধীনতা হরণে তৈরি হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নিবর্তনমূলক আইন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিপন্থী এমন কিছু বিষয় সামনে আনলেন লেখক ও চিন্তকরা।

গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত হয় ‘লেখার স্বাধীনতা’ শিরোনামের এ আলোচনা সভা। উদ্যোগটি নিয়েছে বঙ্গীয় সাহিত্য সভা।

‘লিখতে বসার আগে হাজারবার চিন্তা করতে হয়’ উল্লেখ করে সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘একজন লেখক যখন লিখতে বসেন, তখন তিনি দেশের বর্তমান বাস্তবতায় তার সেরা লেখাটি লিখতে পারেন না। লিখতে বসার আগে হাজারবার চিন্তা করতে হয়। লেখা হয়ে গেলে লেখাটি প্রকাশ করা যাবে কি-না, তা নিয়ে পরের ভাবনা হাজির হয়। লিখতে পারলেও লেখা প্রকাশের নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে তিনটি বই প্রকাশের জন্য আদর্শ প্রকাশনাকে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ না দেয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন আসিফ নজরুল। আইন করে লেখকের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘একজন লেখক হিসেবে আমি আমার লেখাটা লিখতে চাই। এজন্য আমাকে মেরে ফেলা হলেও তা থেকে সরিয়ে আনা যাবে না। ভয় পাওয়া চলবে না। ভয় দেখাতে চাইলে আমরা যদি ভয় না পাই, তাহলে একদিন এই অবস্থা থেকে মুক্তি মিলবে।’

ভিন্নমতের সঙ্গে এক মঞ্চে না বসলে ক্ষমতাসীনরা লাভবান হয় বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক।

তিনি বলেন, ‘ভিন্নমতের সবাই একমঞ্চে বসা যাবে না- এই ধরনের একটি বিভক্তি সব সময়ই ছিল। এতে করে ক্ষমতাসীনরা বা সুবিধাভোগী গোষ্ঠীরা লাভবান হয়। তাই নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে অন্তত আমরা যাতে এক হতে পারি সেদিকে খেয়াল করা জরুরি।’

আলোচনায় আরো অংশ নেন কথাসাহিত্যিক মশিউল আলম, কবি চঞ্চল আশরাফ, লেখক ও সংগঠক ফিরোজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, লেখক ও শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, কবি ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, কবি সাখাওয়াত টিপু, চিকিৎসক ও লেখক সায়ন্থ সাখাওয়াৎ, আদর্শ প্রকাশনার সিইও মাহাবুব রহমান প্রমুখ।

গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গীয় সাহিত্য সভার আহ্বায়ক কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ এবং সদস্য সচিব এহ্সান মাহমুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন কার্যকরী সদস্য কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র।

(ওএস/এএস/মার্চ ১২, ২০২৩)